যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হত্যা করা হয় মিটুরকে

মিটুর হোসেন হত্যাকাণ্ডে জড়িতের অভিযোগে মো. ছিদ্দিক মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি : কালবেলা
মিটুর হোসেন হত্যাকাণ্ডে জড়িতের অভিযোগে মো. ছিদ্দিক মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি : কালবেলা

মাগুরার মিটুর হোসেন হত্যাকাণ্ডের দেড় দশক পর রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর। প্রতিপক্ষকে হত্যা মামলায় ফাঁসাতে নিজেদের পক্ষের মিটুরকে হত্যা করা হয় বলে তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে পিবিআই।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতের অভিযোগে মামলার প্রধান সাক্ষী মো. ছিদ্দিক মুন্সিকে (৫৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ছিদ্দিককে মাগুরার আদালতে সোপর্দ করেছে পিবিআই। এর আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের শিকার মিটুর হোসেন (২০) মাগুরা সদর উপজেলার সংকোচখালী গ্রামের নুরুল ইসলাম ফকিরের ছেলে। গ্রেপ্তার ছিদ্দিক মুন্সি একই গ্রামের আব্দুস সালাম মুন্সির ছেলে।

পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, ২০০৯ সালের ২১ এপ্রিল সকালে মাগুরা সদর থানার সংকোচখালী গ্রামে একটি তিল বোনা জমিতে মিটুর হোসেনের (২০) রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। মাগুরা থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। পরে মিটুর হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম ফকির বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন ছিদ্দিক মুন্সি।

তিনি আরও জানান, মামলাটি প্রথমে সিআইডি তদন্ত করে সাক্ষী ছিদ্দিক মুন্সিকে আসামি করে অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হাইকোর্টে মামলাটির স্থগিতাদেশের আবেদন করলে আদালত মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। ২০১৬ সালে মামলাটির স্থগিতাদেশ খারিজ হলে বিজ্ঞ আদালত পিবিআই যশোরকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। পুনরায় আসামিপক্ষ মামলাটির স্থগিতাদেশ করান। এরপর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিজ্ঞ আদালত পুনরায় স্থগিতাদেশ বাতিলপূর্বক অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই যশোরকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে যশোরের পিবিআই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন মামলার সাক্ষী ছিদ্দিক মুন্সি মিটুর হোসেনকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। এরপর গত বুধবার বিকেলে মাগুরার সংকোচখালী গ্রাম থেকে ছিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান জানান, মাগুরার ওই গ্রামে গ্রাম্য দলাদলির কারণে দুটি পক্ষ ছিল। মিটুর হোসেন হত্যা মামলার বাদী তার বাবা নুরুল ইসলাম ফকির ও সাক্ষী ছিদ্দিক মুন্সি একই পক্ষের। প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছিল। ওই মামলার পালটা মামলা করার পরিকল্পনা করেন ছিদ্দিক মুন্সি। তিনিসহ আরও কয়েকজন আসামি মিটুর হোসেনকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের নামে মামলা দেন।

এসআই হাবিবুর রহমান আরও জানান, ২০০৯ সালের এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে একাধিক সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে ছিদ্দিক মুন্সি প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেদের পক্ষের মিটুর হোসেন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মামলার বাদী নুরুল ইসলাম ফকির ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার

ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতে প্রস্তুত শিমুল বাগান

পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্ক কর্মচারীদের সংঘর্ষ, আহত ৩০

গোলাপগঞ্জে সাইনবোর্ডে ভেসে উঠল ‘চাচা হাসু আপা কোথায়?’

এক যুগেরও বেশি সময় পর নির্বাচন কমিশনে জামায়াত 

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশন গঠন

মাঘের শেষে ফের দুই বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা

পাকিস্তানে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

দলীয় নেতা হত্যায় ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি গ্রেপ্তার

বিক্ষোভ দমনে যেসব পরিকল্পনা করেছিলেন শেখ হাসিনা

১০

শবেবরাতে করণীয় ও বর্জনসমূহ

১১

টাঙ্গুয়ার হাওরে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বনায়ন কার্যক্রম চালু

১২

আ.লীগপন্থি অধ্যাপককে প্রো-ভিসি নিয়োগের চেষ্টা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১৩

মাঘের শেষ দিনে পঞ্চগড়ে বেড়েছে শীতের তীব্রতা

১৪

‘পান থেকে চুন খসলেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ’

১৫

গাজীপুরে কাশেম নিহতের ঘটনায় ফেনীতে গায়েবানা জানাজা ও বিক্ষোভ মিছিল

১৬

ঢাকায় আজ বইছে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস 

১৭

ময়মনসিংহ শহরে অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

১৮

আজ গ্যালেন্টাইন ডে

১৯

আরও ভয়াবহ হতে যাচ্ছে গাজার পরিস্থিতি

২০
X