কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সাথি খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার হয়। তার স্বামী ওই গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক মো. সিমান্ত (৩০)। একই ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের মনছুর শেখের মেয়ে সাথি।
স্বজনদের অভিযোগ, প্রায় আট বছর আগে করাতকান্দির মতিয়ার শেখের ছেলে সিমান্তর সঙ্গে সাথির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। নাহিদ (৬) ও আফসানা (৪ মাস) নামের দুই সন্তান রয়েছে এই দম্পতির। প্রায় এক বছর আগে সিমান্ত তার খালাতো বোনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত এই দম্পতির মধ্যে। সমস্যা সমাধানে পারিবারিকভাবে একাধিকবার শালিসি বৈঠক হলেও এর সমাধান হয়নি। দিন সাতেক আগে সিমান্তকে ৯০ হাজার টাকা দিয়ে সেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে অনুরোধ করেন শ্বশুর মনছুর। এরপরও গত রোববার প্রেমিকার সঙ্গে ঘোরাফেরা করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে সিমান্ত তার স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে হত্যা করেন। ঘটনা চাপা দিতে সাথির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পরে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পলাতক আছেন সিমান্তসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার বেলা ১১টায় কুমারখালী থানা চত্বরে ভ্যানে রাখা সাথির প্যাকেট করা মরদেহ ঘিরে আহাজারি করতে দেখা যায় স্বজনদের।
সাথির বড় ভাই সবুজ বলেন, ‘আমি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। থানায় মামলা করব।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিমান্তের বাড়িতে স্বজন ও উৎসুক জনতার ভিড়। ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। এ সময় সিমান্তর চাচি ডলি খাতুন বলেন, ‘খালাতো বোনের সঙ্গে প্রেম নিয়ে ঝামেলা চলছিল। তবে সাথি কীভাবে মারা গেছে জানি না। ঘটনার পর সিমান্ত মা-বাবাসহ পালিয়ে গেছে।’
নিহতের শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার এসআই বিপ্লব বিশ্বাস। তিনি জানান, খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
মন্তব্য করুন