জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সচ্ছল ব্যক্তিরা পেয়েছিলেন আশ্রয়ণের ঘর, এখন করছেন বিক্রি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। ছবি : কালবেলা
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। ছবি : কালবেলা

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে ২০২৩ সালে নির্মাণ করা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬০টি ঘর। প্রতিটি ঘরের পেছনে খরচ হয় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। ঘরগুলো স্থানীয় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বসবাসের জন্য এরই মধ্যে হস্তান্তর শেষ হয়েছে। তবে বেশ কিছু ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন সচ্ছল ব্যক্তিরা। এর মধ্যে ২৭ নম্বর ঘরটি বিক্রি করে দিয়েছেন জামাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি।

গোপনে এ ঘরটি অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন জামাল আহমেদ। দেনদরবার চলছে আরও কয়েকটির ঘরের। আশ্রয়ণবাসীদের অভিযোগ, প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের না দিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল সচ্ছল ব্যক্তিদের। তাই তারা ঘরে না এসে অন্য লোকদের ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। জামাল আহমেদের বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন আশ্রয়ণের অন্য বাসিন্দারা।

২২ নম্বর ঘরের উপকারভোগী জরিপ আলী বলেন, ৬০ পরিবারের সবাইকে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকে ঘরে আসছেন না। আবার অনেকে অন্যকে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন।

১৫ নম্বর ঘরের বাসিন্দা সুজন মিয়া বলেন, ইউনুস মিয়ার নামে কোনো ঘর বন্দোবস্ত নেই। অবৈধভাবে করে ঢুকে আমাদের প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে আসছে। জামাল আহমেদের নামে ঘর বরাদ্দ, ইউনুস মিয়া তার কাছ থেকে বিনিময়ে (ক্রয় করে) ঢুকেছে। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশন (ভূমি) বরাবর আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ জামাল আহমেদ বলেন, ইউনুস মিয়ার কাছে আমি ঘর বিক্রি করিনি। ঘরটি পড়ে আছে, তাই তাকে থাকতে দিয়েছি। বরাদ্দ পেয়েও নিজে কেন ঘরে ওঠেননি, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো জবাব দেননি।

তবে ইউনুস মিয়া বলেছেন, তিনি এমনি এমনি আসেননি, বিনিময়ে (টাকা দিয়ে কিনে) এসেছেন।

এদিকে, সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় অনেক ঘরের চালা থেকে পড়ছে বৃষ্টির পানি। অধিকাংশ ঘরের পলেস্তারা খসে পড়ছে। উঠে যাচ্ছে দেয়ালের রং। এখনো হয়নি চলাচলের রাস্তা। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের সামনে জমে পানি। কাদায় একাকার হয়ে যায় পুরো আশ্রয়ণ প্রকল্পের পথ।

সার্বিক বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। আমার আগের কর্মকর্তার কীভাবে, কাকে ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন, সেটা আমার জানা নেই। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরকত উল্লাহ বলেন, কেউ ঘর বিক্রি করলে তার বরাদ্দ বাতিল করা হবে। তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞা বলেন, আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনা সত্য হলে ঘর বাতিল করে অন্য অসহায় লোককে দেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট আর জয়, মিরাজের ধন্যবাদ পেলেন যারা

সূর্যের তাপে পুড়ছে পাকিস্তান

রাজনৈতিক মতৈক্যে করিডরের সিদ্ধান্ত নিন, সরকারকে সমমনা জোট

ঈদের আগেই বাজারে আসছে নতুন নোট, যা থাকছে নকশায়

মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে ঢাবি অ্যালামনাই

পদোন্নতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচি

সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া সেই অধ্যক্ষকে কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে অব্যাহতি

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া করিডর নয় : শেখ বাবলু

ইবিতে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের নিন্দা

ইসরায়েলি গুপ্তচর সন্দেহে ইরানে এক জনের ফাঁসি কার্যকর

১০

তীব্র তাপদাহের সঙ্গে মে মাসে কালবৈশাখী-ঘূর্ণিঝড়ের আভাস

১১

ফ্যাসিস্ট আমলে হাজার হাজার শ্রমিককে পথে বসানো হয়েছে : রিজভী

১২

সীমান্তের বাসিন্দাদের যুদ্ধকালীন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভারত

১৩

খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের থানা ঘেরাও

১৪

ইয়েমেনের হামলায় যুদ্ধবিমান হারিয়ে পিছু হটল মার্কিন রণতরী

১৫

বাড়িতে ছাদবাগান থাকলে মিলবে ৫ শতাংশ ট্যাক্স রেয়াত

১৬

সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ এবি পার্টির নেতার বিরুদ্ধে

১৭

সারজিসের উপস্থিতিতে এনসিপির সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

১৮

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাস পেলেন বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা

১৯

সিকদার গ্রুপের ২০৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ 

২০
X