চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অসুস্থ মায়ের সেবা না করায় স্ত্রীকে হত্যা

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেন স্বামী আবদুল মমিন। ছবি : সংগৃহীত
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেন স্বামী আবদুল মমিন। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্ত্রীকে হত্যার আড়াই মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে স্ত্রী শাহিদা বেগমের স্বামী আবদুল মমিন নিজেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।

পুলিশ জানায়, ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ির টয়লেটে শাহিদা বেগমের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার ছেলে মাছুম বিল্লাহ বাদী ও স্বামী আবদুল মমিন (৭৫) ১ নম্বর সাক্ষী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হেশাম উদ্দিন গত ২৭ মার্চ আব্দুল মমিনকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে।

তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২১ এপ্রিল পুলিশ মমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চৌদ্দগ্রাম থানায় নিয়ে আসে। কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একপর্যায়ে শাহিদা বেগমকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করেন।

মমিনের বরাতে পুলিশ জানায়, আবদুল মমিনের মা জীবিত এবং বয়স ১৩০ এর কাছাকাছি। তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। মায়ের সেবা যত্ম নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রায় ঝগড়া হতো। আবদুল মমিন ও তার ভাই পালাক্রমে এক মাস করে তার মায়ের দায়িত্ব নিয়ে সেবা যত্ন করতেন। মমিন তার মাকে নিজেদের অন্য একটি বাড়িতে রাখতেন।

মমিন ও তার স্ত্রী শাহিদা বেগম ধনুসাড়া পূর্বপাড়ায় তাদের নতুন বাড়িতে থাকেন। তিনি স্থানীয় মসজিদে ইমামতি করেন। তার মা যখন তার পুরোনো বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তখন মমিন সেখানে মায়ের খোঁজ খবর নিতে যান। তখন তার মা অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী তার মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। ঠিকঠাক মতো সেবা যত্ন করে না।

ওইদিন গভীর রাতে মমিন তার স্ত্রী শাহিদা বেগমকে মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণের কথা জিজ্ঞেস করে। এতে শাহিদা বেগম গালমন্দ শুরু করেন। এ সময় মমিন তার পাশে থাকা বালিশ দিয়ে তার স্ত্রীকে নাক ও মুখে চাপ দিয়ে ধরে রাখে। কিছুক্ষণ পর দেখেন, তার স্ত্রী আর নড়াচড়া করছেন না। একপর্যায়ে বুঝতে পারেন, তার স্ত্রী আর বেঁচে নেই। পরে ভোর ৪টা থেকে সাড়ে ৪টায় স্ত্রীর লাশ কাঁধে করে বাড়ির উত্তর পাশে টয়লেটের রিংয়ের ভেতরে রেখে ওপরের ঢাকনাটি আবার লাগিয়ে দেন।

লাশ টয়লেটে রেখে ভোর ৫টায় আবদুল মমিন মসজিদে চলে যান। মসজিদ থেকে এসে তার ছেলেকে ফোন দিয়ে বলেন, তোমার মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে তার ছেলেসহ আশপাশের লোকজন মমিনের নতুন বাড়িতে এসে অনেক খোঁজাখুজির পর সকাল সাড়ে ৭টায় লাশ খুঁজে পায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ, তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, কেয়ারটেকারকে ঘিরে সন্দেহ

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

শাহজালাল বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তায় ৬ নির্দেশনা

খালসহ ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করলেন খুলনার জেলা প্রশাসক

৩০ আগস্ট ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন

জুলাই শহীদদের স্মৃতি স্মরণে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন

বছর ঘুরে ফিরল সেই জুলাই 

৩৬ জুলাই বিপ্লব ও নির্মম নির্যাতনের মধ্যেও বেঁচে ফেরার গল্প

১০

৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ / এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা

১১

খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষের অভিযোগ

১২

রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ‘সান্তাল হুল’ দিবস উদযাপন

১৩

২৯৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করল চসিক

১৪

যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন ইউনূস-রুবিও

১৫

করোনার ‘ভুল রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণা’, অতঃপর...

১৬

ইরানে একাধিক ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

১৭

ঢাবি শিক্ষার্থী সৌমিকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

১৮

ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবিসাসের অফিসরুম ভাঙচুর

১৯

গাজাবাসীর জন্য বিশেষ ভিসা চালু করতে স্টারমারকে ব্রিটিশ এমপিদের চিঠি

২০
X