বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিনিয়োগ নিয়ে দেশে অনেক সার্কাস দেখতে পাচ্ছি। আমার কথাগুলো অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়, তবুও বলছি- যারা বিনিয়োগ বোঝে, তারা জানে এই সার্কাসের মাধ্যমে বিনিয়োগ হবে না।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তরুণদের সৃজনশীলতা, দক্ষতা ও ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন এবং জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে তা সংযুক্ত করতে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে।
এ সময় আমীর খসরু বলেন, বিনিয়োগ হতে হলে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত, স্থিতিশীল সরকার থাকতে হবে। তখনই বিনিয়োগকারীরা সরকারের মানসিকতা, দায়বদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেখে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। আমাদের দেশের ভেতরে কিংবা বাইরে থেকে বিনিয়োগ আনতে হলে, আগে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। সেটা তখনই সম্ভব, যখন একটি প্রকৃত অর্থে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার থাকবে। আজকে কি বাংলাদেশে সে অবস্থা আছে? আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় দিয়েছি কিন্তু এখনো দেশে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার আসেনি।
তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না হবে, ততদিন বিনিয়োগ হবে না- না দেশের ভেতরে, না বাইরের কেউ আসবে।
বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এখানে যে সম্মেলন হয়েছে, আমরা ওদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবশেষে তাদের প্রশ্ন- তোমাদের নির্বাচন কবে?
আমীর খসরু বলেন, দেশের রিপ্রোডাক্টিভ সেটা ব্যবসা হোক বা চাকরি হোক এটা প্রোডাক্টিভ করার জন্য প্রধান যে কাজ হলো সেটি হলো শিক্ষা। সারা বিশ্বে শিক্ষার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে নিচের দিকে। এ জন্য বিএনপির ৩১ দফা লক্ষ করবেন- আমরা প্রস্তাব দিয়েছি আগামী দিনে জিডিপির ৫ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ করা হবে। এটা একটা বড় অ্যাকাউন্ট। এটা ব্যয় করা হবে স্কিল ডেভেলপ করতে, রি-স্কিল ডেভেলপ করতে। এই বিনিয়োগে বিএনপি কমিটেড।
সেমিনারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা সাঈদ আল নোমান তিনটি প্রস্তাবনা রাখেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন- ডা. জাহেদুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, স্টেট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আকতার হোসেন খান, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নসরুল কদির, ইউনিভার্সিটি অব ডালাস টেক্সাসের শিক্ষক শাফকাত রাব্বি, কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইয়েদ আবদুল্লাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউছুপ, যুক্তরাষ্ট্রের ওরাকলের সি. ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মুনতাসীর মুনির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাহরিন আই খান, চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ, যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, পাঠাও-এর সিইও ফাহিম আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন