চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে নাগরিক সেবা বিষয়ক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ কর্মসূচিকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম। এতে সভাপতিত্ব করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদিউর রহমান জাদিদ এবং সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি/এসিল্যান্ড) আব্দুল্লা আল মামুন।
গণশুনানিতে ইউনিয়নবাসী সরাসরি নানা সমস্যা ও অভিযোগ তুলে ধরেন। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা, রাস্তাঘাট ও কালভার্ট নির্মাণ, মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সংকট, শ্মশান সংস্কার, মাদক ও কিশোর গ্যাং- সব বিষয় নিয়েই দীর্ঘ আলোচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, সরকার জনগণের সেবায় বদ্ধপরিকর। এ ধরনের গণশুনানি আমাদের সরাসরি সমস্যাগুলো শুনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে। তিনি ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন এবং শিক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি আরও বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করবে। প্রশাসন জনগণের পাশে আছে, প্রতিটি সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদিউর রহমান জাদিদ বলেন, এ প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ডের সলিমপুরে স্থানীয়দের সরাসরি কথা শোনার সুযোগ তৈরি হলো। জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রতিটি উপজেলায় এমন গণশুনানি আয়োজন করা হবে।
গণশুনানিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় শিক্ষকরা শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা সমস্যার কথা জানান। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ইউনিয়নের সড়ক ও শ্মশান সংস্কার এবং কালভার্ট নির্মাণের নির্দেশ দেন ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে।
অনুষ্ঠানে ১০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়া সীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, যা উপস্থিতদের আবেগাপ্লুত করে।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে বৃক্ষ রোপণ করেন। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গণশুনানিতে অংশ নেওয়া স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। তারা আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের নিয়মিত গণশুনানি নাগরিক সমস্যার দ্রুত সমাধান ও প্রশাসনের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ ও কার্যকর করে তুলবে।
মন্তব্য করুন