মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে পিকনিকে আসা তরুণীদের প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদের কাছ থেকে টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সময় তরুণীদের মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক লঞ্চের সামনে দুই নারীকে বেল্ট দিয়ে পেটাচ্ছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে ৩০০-৪০০ ছেলে-মেয়ে ভ্রমণের উদ্দেশে এমভি ক্যাপ্টেন লঞ্চ ভাড়া করে। কিছু ছেলে-মেয়ে লঞ্চের ছাদে গান-বাজনা ও নাচ করে। সদর ঘাট থেকে রওনা হয়ে চাঁদপুর মোহনপুর ঘুরে লঞ্চটি আবার ঢাকায় ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালে থামায়।
এ সময় লঞ্চে থাকা ৮-১০ জন ছেলে মেয়েরা চা-নাশতা খাওয়ার জন্য নিচে নামলে অশ্লীলতার অভিযোগ তুলে লঞ্চঘাটে থাকা স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়। ঘাটে থাকা ৫০-৬০ জন লঞ্চটিতে উঠে ছেলে-মেয়েদের হেনস্তা ও মারপিট করে। একপর্যায়ে দুই নারীকে লঞ্চের সামনে এনে প্রকাশ্যে মারধর করেন একজন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, সন্ধ্যার নাশতা কেনার জন্য ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী লঞ্চ থেকে পন্টুনে নামে। সেখানে থাকা স্থানীয়রা মাদকসেবী সন্দেহে তাদের পিছু নিয়ে লঞ্চে ওঠার চেষ্টা করলে লঞ্চের ম্যানেজার মো. শফিক তাদের প্রবেশে বাধা দেয়। এতে উত্তেজিত লোকজন জড়ো হয়ে লঞ্চে ঢুকে ভাঙচুর, লুটপাট ও যাত্রীদের মারপিট করে। পরে খবর পেয়ে নৌপুলিশ ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজনা কমে আসে। তবে ভুক্তভোগীরা এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। তারা জানিয়েছে আজ অভিযোগ করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিডিওতে মারধর করতে থাকা নেহাল আহমেদ জিহাদ বলেন, স্থানীয় ২-৩শ লোক তাদের আচরণ ও বেশভূষায় ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করতে চলে আসে। আমি তাদের নিবৃত্ত করতে ভাই হিসেবে শাসন করেছি। এটা আমার করা উচিৎ হয়নি। আবার আমি এটা না করলে আরও বেশি হেনস্তা করত। তাছাড়া স্থানীয়দের কাছ থেকে অন্তত ৯টি মোবাইল আমি তাদের উদ্ধার করে দিয়েছি। আমি মারধরের ঘটনায় অনুতপ্ত এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
মন্তব্য করুন