গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের খামারিরা আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত ১২ হাজার গবাদিপশু নিয়ে। বন্যায় খড় সংকটে গরু বিক্রি করে দেওয়ায় গত ঈদের চাইতে এবার কমেছে ৪ হাজার গরু। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি বাড়তে থাকায় গরু বাজার নিয়ে শঙ্কিত খামারিরা।
এ বছর সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে গরু বাজার করতে না দেওয়ায় ইজারাদারা স্থান নিয়ে সমস্যায় আছেন। ছোট বড় মিলিয়ে এবার মোট খামারের সংখ্যা ১৮৭৭টি। এসব খামার থেকে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মিলিয়ে ঈদ বাজারে যাবে মোট ১৩ হাজার ৩৯৯টি গবাদিপশু। ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস নিয়েছে বিভিন্ন প্রস্তুতি।
জানা গেছে, চৌদ্দগ্রামে গত কোরবানির ঈদে ২০৪৪টি খামার থেকে ১৬ হাজার ৮০০ গবাদিপশু বাজারে আসে। গত বছর আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ খামার। খড় পচে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে গবাদিপশু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন খামারিরা। তাই এবার কোরবানির জন্য গবাদিপশুর সংখ্যাও কমেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, উপজেলা পর্যায়ে এবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত ১১ হাজার ৮৬৪টি গরু, ৩১টি মহিষ ও ছাগল-ভেড়া ১৫০৪টি। তবে স্থানীয় ক্রেতা বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের গবাদিপশুর সংখ্যা বেশি হতে পারে।
পৌরসভা চাটিতলা গ্রামের খামারি মাসুদ মিয়া বলেন, বন্যায় আমার গরু মারা যায়নি, তবে খড় পচে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে কঙ্কালসার গরু গত বছরের শেষ দিকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হই।
মিয়াবাজার আদর ডেইরি ফার্মের মালিক ইলিয়াস আহমেদ বলেন, গত বন্যায় আমার কয়েকটি গরু মারা যায়। তার ওপর বেড়ে গেছে গো-খাদ্যের দাম। যার ফলে এবার ঈদ বাজারের জন্য আমার গরুও কম।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন সাগর কালবেলাকে বলেন, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ২১ সদস্য বিশিষ্ট ৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা প্রতিদিন রোটেশনালি ৫টি করে হাট পর্যবেক্ষণ করবেন এবং সেবা প্রদান করবেন।
তিনি আরও বলেন, সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে যেখানে খামারিরা যে কোনো সমস্যায় ২৪/৭ সেবা পাবেন। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে প্রাণিসম্পদ বিভাগ সার্বিক মনিটরিং এ মাঠে থাকবে।
চৌদ্দগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, গরু বাজারে আশপাশে ও পশুবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও হয়রানি যাতে না হয় সেই দিকে আমাদের থানা পুলিশের কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন