কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় ও প্রবল স্রোতের টানে সড়ক-ব্রিজ ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে থাকা ৬২টি সড়কের প্রায় সবই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া তালিকার মধ্যে রয়েছে ১টি সেতু, ১টি কালভার্টসহ ১৫টি রোড়। তবে ১২টি সড়ক কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে পূর্ণ সংস্কার করে সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা গেলেও ৩টি সড়কে এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এরই মধ্যে গত ২৭ আগস্টের পাহাড়ি ঢলে সংস্কার করা ৮টি প্রধান সড়কের মধ্যে ৪টি ফের ভেঙে যায়। উপজেলার ৪০.৩৮ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৬২ কোটি টাকা।
এলজিইডি চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী সাফায়াত ফারুক চৌধুরী বলেন, রেকর্ড সৃষ্টি করা পাহাড়ি ঢলের স্রোতে উপজেলার এলজিইডির আওতাধীন প্রতিটি সড়কের বিভিন্ন স্থানের কমবেশি সড়ক ভেঙে গেছে। এতে ১টি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ সড়ক পুনরায় সংস্কার করে চালু করতে জরুরি ভিত্তিতে ৪২ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে, ১২টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি তিনটির এখনো বন্ধ রয়েছে বলে কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এফায়াত ফারুক চৌধুরী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে কাকারা ইউনিয়নের লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, সুরাজপুর-মানিকপুর, বমুবিলছড়ি, চিরিঙ্গা, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, সাহারবিল, ফাঁসিয়াখালী, পূর্ব বড়ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড়ভেওলা, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া ও বদরখালী ইউনিয়নের সড়কগুলো কমবেশি ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ জনগণ।
হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আগের বন্যার সড়কগুলো জোড়াতালি দিয়ে চালু করা হলেও ২৭ আগস্ট আবারও এই ইউনিয়নের ৪টি সড়ক ভেঙে গেছে।’
চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী ও চকরিয়ার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানান, প্রতিটি ইউনিয়নের সড়কগুলো কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। আপাতত জোড়াতালি দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার ও ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
এদিকে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সাফায়াত ফারুক চৌধুরী জানান, কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৮টির ইউনিয়নের মধ্যে দফায় দফায় বন্যায় ৬২টি এলজিইডির ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকা নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬২ কোটি টাকার ক্ষতির কথা উল্লেখ করে আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন