আওয়ামী লীগের শাসনামলে সারা দেশে বিএনপির প্রায় ছয়শজনের অধিক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয়েছে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। স্বৈরাচারী সরকারের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে গুম করে রাখা হয়। গুম একটি ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী অপরাধ। প্রতিটি গুমের তদন্ত ও বিচার একদিন হবেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বুধবার (৩০ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউরি নুর আহম্মেদ সড়কে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে রাজনৈতিক কারণে গুমের শিকার মানুষ মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিল করছে। গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমকে তাদের প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে গুমকে পথের কাঁটা দূর করার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এ নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর নজরুল ইসলাম বাচা চেয়ারম্যানসহ অসংখ্য মানুষ। আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য কক্সবাজারের সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে।
নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে কালো ব্যানার নিয়ে কাজীর দেউরি নুর আহম্মেদ সড়ক থেকে মৌন মিছিল শুরু করে নেভাল মোড়, লাভ লেইন হয়ে কাজীর দেউরি মোড় হয়ে পুনরায় নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে মিছিল শেষ হয়। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনসমর্থনহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এই ধারা বয়ে চলতে চলতে দেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে গেছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই। কেবল একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জনজীবনে স্বস্তি ফিরবে।
মন্তব্য করুন