মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা

সমুদযাত্রার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন উপকূলের জেলেরা। ছবি : কালবেলা
সমুদযাত্রার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন উপকূলের জেলেরা। ছবি : কালবেলা

ইলিশের প্রজনন ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে হচ্ছে বুধবার (১১ জুন) মধ্যরাতে। ইতোমধ্যে সমুদযাত্রার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন উপকূলের জেলেরা।

দীর্ঘ দুই মাস পর ফের সমুদ্রে মাছ ধরতে নামছেন উপকূলীয় জেলেরা। নীল জলরাশির বুকে এবার তারা পাড়ি দিবেন এক বুক স্বপ্ন, কিছুটা শঙ্কা আর অনেকটা প্রত্যাশা নিয়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আলীপুর ও মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রজুড়ে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। ট্রলার পরিষ্কার, জাল সেলাই, ইঞ্জিন মেরামত, বরফ ও খাদ্য মজুতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন হাজারো জেলে। সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।

জানা গেছে, ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছিল সরকার। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সময়ের অসামঞ্জস্যতা এবং জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার সময় পরিবর্তন করে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন নির্ধারণ করা হয়।

এ সময়ে সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরা, পরিবহন, সংরক্ষণ ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। আইন ভঙ্গকারীদের জেল ও জরিমানাও দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আশা এবার সমুদ্রে ধরা পড়বে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় অনেক প্রকৃত জেলে সরকারি প্রণোদনার চাল পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন।

আলীপুর বন্দরের এক জেলে বলেন, আমি ১০ বছর ধরে সমুদ্রে যাই। কিন্তু এখনো সরকারি প্রণোদনার তালিকায় আমার নাম নেই। বরং দেখেছি, যারা জেলে নয় তারাও চাল পেয়েছে। আমরা চাই প্রকৃত জেলেদের তালিকাভুক্ত করা হোক।

জেলে কাদের পহলান বলেন, ৫৮ দিন ধরে ধারদেনা করে চলেছি। সরকার যে চাল দিয়েছে, তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হয়নি। এখন সমুদ্রে নেমেও যদি ইলিশ না পাই, তাহলে বিপদ আরও বাড়বে।

মান্নান নামে আরেক জেলে বলেন, আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে পালন করেছি। এখন সমুদ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, এবার কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়বে।

মহিপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজু আহমেদ রাজা মিয়া বলেন, জেলেরা সঠিকভাবে সরকারের নিষেধাজ্ঞা পালন করেছে। আশা করছি, মাছের সরবরাহ বাড়বে। এতে বাজারে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের দাম কিছুটা কমতে পারে। ব্যবসাও জমে উঠবে।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ছিল ইলিশের উৎপাদন ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা। আমরা সফলভাবে তা বাস্তবায়ন করেছি। জেলেরা সরাসরি সুফল পাবে। প্রণোদনার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, উদ্ধার করল যৌথবাহিনী

৩৭ বছর আগেও আহমেদাবাদে ঘটে ভয়ংকর দুর্ঘটনা

শহীদ হাফেজ মোহাম্মদ হাসানের কবর জিয়ারত করলেন ছাত্রদল সম্পাদক

যখন উঠে দাঁড়াই, চারপাশে শুধু লাশ : বিমানের বেঁচে যাওয়া যাত্রী

বরগুনায় মশা নিধনে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান মনি’র

নির্বাচনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও গণহত্যার বিচার : আবু হানিফ

এয়ার ইন্ডিয়ার গর্বের পেছনে মর্মান্তিক ১৩০০ মৃত্যু

ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে যা বললেন মিরাজ

রাজনীতি নিষিদ্ধ গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা

প্রস্তুতি ম্যাচেও ব্যাটারদের ব্যর্থতা

১০

‘ইনসাফ’র মতো সিনেমা আগে করিনি : রাজ

১১

চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনাবাহিনীর হাতে ৩ সমন্বয়ক আটক

১২

ড. ইউনূসের লন্ডন সফর নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সন্তোষ প্রকাশ

১৩

ছোট ভাইকে বাঁচাতে বড় বোনের পুকুরে ঝাঁপ, প্রাণ গেল দুজনেরই

১৪

এপ্রিল নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয় : প্রিন্স

১৫

ঘুম থেকে উঠে দেখি সারা বাংলাদেশ ভাইরাল : সমু চৌধুরী

১৬

রংপুর-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজহার

১৭

বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন এক যাত্রী (ভিডিও)

১৮

বৃদ্ধার জমি দখলের চেষ্টায় বিএনপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ২

১৯

হাজীগঞ্জে এনসিপির উদ্যোগে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

২০
X