নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গ্রাম্য সালিশে দুই যুবককে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে বারদী ইউনিয়নের মসলেন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভুক্তভোগীরা হলেন, বারদী ইউনিয়নের মসলন্দপুর গ্রামের নবী হোসেনের ছেলে আল আমিন ও একই গ্রামের জামান মিয়ার ছেলে পারভেজ।
জানা যায়, এভারগ্রিন কিন্ডারগার্টেন নামের একটি স্কুল থেকে সোমবার (৯ জুন) রাতে ৯টি ফ্যান ও বৈদ্যুতিক মোটর চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে পার্শ্ববর্তী আড়াইহাজার উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় গত শনিবার দুপুরে ফ্যান ও মোটর বিক্রি করতে গেলে জনতার হাতে ধরা পড়ে আল আমিন ও পারভেজ নামের দুই যুবক।
পরে তাদের ধরে গণধোলাই দেয় স্থানীয়রা। পরে বিকেলে মসলন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি সালিশের আয়োজন করা হয়। সেই সালিশে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য ওমর ফারুকসহ শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় চুরির দায়ে দুই যুবককে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইউপি সদস্য ওমর ফারুক ও মসলেন্দপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ ওরফে নুরা পাগলা নিজেই প্লাস্টিকের পানির পাইপ দিয়ে উপস্থিত লোকজনের সামনে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য গলায় পা দিয়ে চেপে ধরেন।
স্থানীয়দের দাবি, ওই এলাকার আল আমিন, শান্ত ও পারভেজের চুরির কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা ও বাড়িঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে তারা। তাদের বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিকভাবে বিচার করলেও তারা নিজেদের শুধরে নেয়নি। তাই রাগান্বিত হয়ে ইউপি সদস্য নিজেই লাঠি দিয়ে আঘাত করেছেন।
অভিযুক্ত বারদী ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য ওমর ফারুক জানান, তাদের বিচার করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। চোরেরা তার আত্মীয় হওয়ার কারণে এমনভাবে শাসন করেছেন। বিচার সালিশে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পুলিশে দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সোনারগাঁ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মামুন বলেন, ভিডিওতে যা দেখলাম কুকুরকেও এভাবে মানুষ মারতে পারে না। পেছনে হাত বেঁধে দুই ব্যক্তি একের পর এক আঘাত করছেন। তবে তারা অপরাধী হলে পুলিশে দিতে পারত।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, দুই যুবককে হাত বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন