চোখ তুলে তাকাতেই দেখা মেলে গাছের ডালে, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে, না হয় তারেই জালের মতো ঝুলে আছে ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ আর টেলিফোন লাইনের তার। এসব তারের অগোছালো জঞ্জাল শুধু সৌন্দর্যই নষ্ট করে না, ছিঁড়ে পড়ে কিংবা আগুন ধরে বিপজ্জনক দুর্ঘটনারও অন্যতম কারণ।
এবার ‘স্মার্ট চট্টগ্রাম’ গড়ার অংশ হিসেবে মাটির নিচে যাবে এসব ইন্টারনেটের তার। চট্টগ্রাম শহরের পরিচিত দৃশ্যটিকে বদলে দিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বুধবার (১৮ জুন) ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সংস্থাটি। নগর ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এ সময় প্রতিষ্ঠানটি নগরীকে তারের জঞ্জালমুক্ত করে সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ ও অন্যান্য স্মার্ট প্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী—শুরুতে চট্টগ্রামের ২৩, ২৪, ২৭, ২৮ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলকভাবে আন্ডারগ্রাউন্ড অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল বসানো হবে। প্রতিটি বাসার নিচে থাকবে একটি সংযোগ বক্স, যেখান থেকে মিলবে উচ্চগতির ইন্টারনেট। পর্যায়ক্রমে পুরো নগরীতে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, আমরা ঝুলন্ত তারের শহর আর রাখতে চাই না। এই উদ্যোগ শুধু শহরের সৌন্দর্য বাড়াবে না, ইন্টারনেট ব্যবস্থাকেও করবে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন। এই ‘ভূগর্ভস্থ কেবলিং’ শুধু প্রযুক্তিগত সুবিধা দেবে তা নয়—নগরের আবহও পাল্টাবে। ফুটপাতের পাশে তার টানার জন্য আর খুঁটি লাগবে না, রাস্তায় তার টানার কাজ করতে গিয়ে যানজটও হবে না।
এদিকে নগরীকে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত করতে সিটি করপোরেশনের নতুন এ উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন নগরবাসী। তাদের মতে, চুক্তি অনুযায়ী কাজ হলে নগরীর চিত্রই পাল্টে যাবে।
নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দিদারুল আলম বলেন, রাস্তায় বের হলেই মাথার ওপর তারের জটলা দেখে ভয় লাগে। অনেক সময় এই তারে আগুন ধরে যেতেও দেখা যায়। যদি এটা সত্যি মাটির নিচে চলে যায়, তাহলে নগরটা সত্যিই বদলে যাবে।
রামপুরা ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, অনেক পরে হলেও এ উদ্যোগ নেওয়ায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তবে কাজ কতটুকু হবে তা সময়ই বলে দেবে।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, আইন কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মুরাদ এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এস এম সারোয়ার আলম। ফাইবার অ্যাট হোমের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জেনারেল ম্যানেজার সরফুদ্দিন ভূঁইয়া ও কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ ইসরাইল সবুজ।
মন্তব্য করুন