কুমিল্লায় পুলিশের হেফাজতে শেখ জুয়েল (৪৫) নামের এক বিএনপি কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে জুয়েলের মৃত্যু হয়। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিএনপির নেতারা বাঙ্গরা বাজার থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
পরিবারের অভিযোগ, মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় পুলিশ হেফাজতে শেখ জুয়েলের (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। তাকে আটক করে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তবে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।
নিহত জুয়েল বাঙ্গরা গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয়ভাবে ইন্টারনেট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি শেখ বাড়ির মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গোপন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঙ্গরা বাজার ব্রিক ফিল্ডের পূর্ব পাশে জনৈক হেলালের বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ জুয়েল ও তার ৪ সহযোগীকে আটক করে থানায় আনা হয়। রাতে হাজতে জুয়েল অসুস্থ হয়ে পড়লে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, ‘সকাল থেকে আমার স্বামী বিল কালেকশন করতে বের হয়েছিলেন। দুপুরের পর শুনি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। থানায় গিয়ে দেখা করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।’
পরে অনেক অনুরোধে দেখা করতে দিলে জুয়েল বলেন, আমি কিছু করিনি। আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করো। তখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। সন্ধ্যার পর জানানো হয়, তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গিয়ে দেখি, তিনি আর বেঁচে নেই।
জুয়েলের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, ‘আমার বাবাকে বিনা অপরাধে ধরে নিয়ে পুলিশ মেরে ফেলেছে। ওনাকে হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়েও কিছু জানায়নি।
নিহতের চাচাতো ভাই ও উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতা শেখ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই আল আমিন তাকে আটক করেন। রাত ৯টার পর ফোন দিলে এসআই বলেন, হাসপাতালে যেতে। সেখানে গিয়ে দেখি, জুয়েল মারা গেছেন।’
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, রাত ৮টা ৫০ মিনিটে পুলিশ তাকে হাসপাতালে আনলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) একেএম কামরুজ্জামান বলেন, আটক জুয়েলকে পুলিশ নির্যাতন করেনি। অন্য কোনো কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। শুক্রবার (২০ জুন) মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
মন্তব্য করুন