কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীদের অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কুমিল্লার বরুড়ায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সম্প্রতি বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষের একটি ভিডিও শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে অস্ত্রসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী রিয়াজ ও ফরহাদকে মহড়া দিতে দেখা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার খোশবাস উত্তর ইউনিয়ন এলাকায় দলীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর একটি পক্ষে নেতৃত্বে দিচ্ছেন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক খোরশেদ আলম খোকা এবং অপর পক্ষে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কবির হোসেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত ১২ আগস্ট দুপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে একটি ব্যানার টানানো হয়। ওই ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও উপজেলা চেয়ারম্যান এএনএম মইনুল ইসলামের ছবির সঙ্গে রিয়াজ হোসেন ও ফরহাদ হোসেনের ছবি দেওয়া হয়। এতে খোরশেদ আলম খোকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ব্যানারটি ছিঁড়ে ফেলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত দলীয় একাধিক নেতা বলেন, এ সময় খোশবাস উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোক দিবসের প্রস্তুতি সভা চলছিল। এসময় ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে অস্ত্রসহ কবির গ্রুপের নেতাকর্মীরা খোরশেদ আলম খোকার লোকজনের উপর হামলার চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কবির হোসেনের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী রিয়াজ ও ফরহাদকে অস্ত্রসহ মহড়া দিতে দেখা যায়। এর এক পর্যায়ে কবিরসহ অন্যরা তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।
অস্ত্রের এ মহড়া বিষয়ে কবির হোসেন জানান, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন আমি ছিলাম অনুষ্ঠানের মঞ্চে। পরে এসে দেখি রিয়াজ ও ফরহাদের হাতে অস্ত্র। তখন তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। তবে রিয়াজ ও ফরহাদ আমার অনুসারী না।’
এ বিষয়ে খোরশেদ আলম খোকা বলেন, ‘যাদের হাতে অস্ত্র দেখা গেছে তারা আমাদের অনুসারী নয়। দলের কোনো পদে আছে কিনা তাও জানি না। ব্যানারটি ছিঁড়ে ফেলায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।’
এ ঘটনায় বরুড়া থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘অবৈধভাবে অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনাটি দেরিতে হলেও আমাদের নজরে এসেছে। অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন