রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণক্ষমতা বিপৎসীমা অতিক্রম করায় চাপ কমাতে খুলে দেওয়া হয়েছে বাঁধের ১৬টি জলকপাট।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ১০ মিনিটে কাপ্তাই বাঁধের স্পিলওয়ের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে।
এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশিত হচ্ছে। এর আগে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমায় পৌঁছে যায়।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ১০৮ দশমিক ১২ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল)। হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহামুদ হাসান কালবেলাকে বলেন, পানির চাপ বাড়ায় বাঁধের স্পিলওয়ের ১৬টি গেট দিয়ে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি বের হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট চালু রেখে ২২০ থেকে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলীতে পড়ছে। কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।
তিনি আরও বলেন, হ্রদে ১০৮ এমএসএল পানি হলে তাকে বিপৎসীমা হিসেবে ধরা হয়। এই পরিমাণ অতিক্রান্ত হওয়ায় বাঁধের ঝুঁকি এড়াতে স্পিলওয়ে দিয়ে পানি ছাড়া হয়। পানি ছাড়ার পর সর্বোচ্চ ১০৯ এমএসএল পর্যন্ত পানি ধরে রাখার চেষ্টা করা হবে। তবে বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল এবং উজান থেকে ধেঁয়ে আসা পানির পরিমাণ যদি বৃদ্ধি পায় তার উপর ভিত্তি করে স্পিলওয়ে দিয়ে পানি ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি বা কমানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে এক বিশেষ ঘোষণায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় অথবা প্রয়োজনে যে কোনো সময় স্পিলওয়ের গেট খুলে পানি ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। এতে কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
উল্লেখ্য, পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীর ওপর কৃত্রিমভাবে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় ৭০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানব সৃষ্ট কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি হয়। এই বাঁধ নির্মাণের ফলে রাঙামাটি জেলাধীন প্রায় ৫৪ হাজার একর কৃষিজমি ডুবে যায়।
মন্তব্য করুন