যশোরের অভয়নগরের ‘ব্যবসায়ীকে বালিতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়’ ঘটনা মিথ্যা দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করছেন নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দপ্তরীর স্ত্রী লাবণ্য রহমান।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, নওয়াপাড়ার মেসার্স আফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহনেওয়াজ কবির টিপু অসংখ্য ব্যবসায়ীর শত শত কোটি টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাতের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যেসব ব্যবসায়ী পাওনা টাকা আদায়ে অনঢ় তাদের বিরুদ্ধে কল্পকাহিনি সাজিয়ে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ‘বালিতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়ের’ কাহিনি সাজিয়ে তার স্বামী নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দপ্তরী, কামরুজ্জামান মজুমদার, আসাদুজ্জামান জনিসহ পাঁচ থেকে ছয়জনের নামে চাঁদাবাজি মামলা করেছেন। মূলত, তার স্বামী পাওনা টাকা আদায়ে মধ্যস্থতা করেছেন, চাঁদাবাজি করেননি।’
তিনি বলেন, শাহনেওয়াজ কবির টিপুর সঙ্গে মেসার্স জনি এন্টারপ্রাইজ চুক্তিবদ্ধ হয়। মেসার্স জনি এন্টারপ্রাইজের পরিচালক আসাদুজ্জামান জনি বিভিন্ন সময়ে ৪ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন শাহনেওয়াজ কবির টিপুকে। মফিজুর রহমান দপ্তরীও নিজের কিছু এবং কয়েকজন ছোট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ কোটি টাকা দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে চুক্তি অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেন না শাহনেওয়াজ কবির টিপু। এর মধ্যে বকেয়া ১২৫ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় নাবিল গ্রুপ শাহনেওয়াজ কবির টিপুকে গম দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জনি এন্টারপ্রাইজ তার বিনিয়োগ করা টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জনি এন্টারপ্রাইজের ইউসিবি ব্যাংকের হিসাব নম্বরে ২ কোটি টাকা প্রদান করে। বাকি ২ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেয়। কিন্তু দুই সপ্তাহ পার হলেও টিপু টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।
একপর্যায়ে চাপ প্রয়োগ করলে টিপু কয়েক ধাপে তার স্বামীর পূবালী ব্যাংক নওয়াপাড়া শাখার মেসার্স মফিজ ট্রেডিংয়ের হিসাব নম্বরে ২ কোটি টাকা জমা দেন। টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনি এন্টারপ্রাইজের পাওনা ১ কোটি টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে দেন। অবশিষ্ট ১ কোটি টাকা যাদের কাছ থেকে এনে বিনিয়োগ করেছিলেন তাদে ফেরত দেন। এক বছর পর চলতি মাসের ২ তারিখে ঘটনা ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবির টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুনকে দিয়ে মিথ্যা কল্পকাহিনি সাজিয়ে মফিজুর রহমান, কামরুজ্জামান মজুমদার, আসাদুজ্জামান জনিসহ পাঁচ থেকে ছয়জনের নামে চাঁদাবাজি মামলা করেছেন।
আসমা খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে বালু চাপা দিয়ে দুই বারে ৪ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন আসাদুজ্জামান জনি, সম্রাট হোসেন ও নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন। এখন নতুন নাটক সাজিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন। অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে আসল ঘটনা বলা যাবে।
মন্তব্য করুন