হবিগঞ্জের মাধবপুরে মসজিদের এক মুয়াজ্জিনকে প্রায় ২২ বছর ধরে এক বেলা করে মাছ-মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াচ্ছেন স্থানীয় এক হোটেল মালিক। ওই হোটেল মালিকের নাম আব্দুল কাইয়ুম। হোটেলের নাম জিলানী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। উপজেলা মনতলা স্টেশন বাজারের কলেজ রোডে এর অবস্থান।
ওই বয়স্ক মুয়াজ্জিনের নাম মোহাম্মদ আলী। মনতলা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশাদার মুয়াজ্জিন। তিনি সেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ান ও সুরেলা কণ্ঠে নিয়মিত আজান দেন।
জানা গেছে, জিলানী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক কাইয়ুম মিয়া আল্লাহ সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মানবিক কারণে বয়স্ক ও হতদরিদ্র ওই মুয়াজ্জিনকে প্রতিদিন মাছ ও মাংস দিয়ে ভাত খাওয়ান। যার বিল প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ টাকা হয়। ২২ বছরে সেই হিসাবে প্রায় ৮ লাখ টাকার কাছাকাছি দাঁড়ায়। এসবের কোনো প্রচার চান না হোটেল মালিক আব্দুল কাইয়ুম। ভালোবেসে মানবিক কারণে ওই মুয়াজ্জিনকে খাওয়াতে পেরে বরং সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছেন। আব্দুল কাইয়ুম স্থানীয় আউলিয়াবাদ গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে।
লিটন দেব নামে ওই হোটেলের একজন কর্মী বলেন, আমরা অত্যন্ত মায়া করে তাকে খাওয়াই। তিনি যা খেতে চান তা-ই আমরা পরিবেশন করি। বয়স বাড়ার কারণে মুয়াজ্জিন সাহেব আগের মতো বেশি ভাতও খেতে পারেন না।
হোটেল মালিক আব্দুল কাইয়ুম কালবেলাকে বলেন, মানুষ হিসেবে ও তরিকাপন্থি হিসেবে এটা বড় কোনো কাজ নয়। রিজিকের মালিক আল্লাহ। মুয়াজ্জিন সাহেবকে খাওয়াতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত।
মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ আলী কালবেলাকে বলেন, হোটেলটা আমার ঘরের মতো হয়ে গেছে। অত্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে তাদের রান্না হয় বিধায় নিয়মিত খেয়েও কোনো সমস্যাই হয় না আমার। এরা আমাকে অত্যন্ত ভালোবেসে খাওয়াচ্ছে। নামাজে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের জন্য দোয়া চলে আসে।
হোটেল মালিক কর্তৃক দীর্ঘদিন ধরে মুয়াজ্জিনকে খাওয়ানোর বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মাধবপুরের ইউএনও মুজিবুল ইসলাম, স্থানীয় ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ও মনতলা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মাওলানা নুরুজ্জামানসহ এলাকার বিশিষ্টজন।
মন্তব্য করুন