চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে না পাওয়ায় এক ইটভাটা ও আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাড়ি লক্ষ্য করে বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে চলে গেছেন চার যুবক। ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গুলির ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার মেখল ইউনিয়নের উত্তর মেখল গ্রামের ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলমের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দুপুরের পর জেলা ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার আগে মো. জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে দুটি মোটরসাইকেল করে এসে ছয় অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী যুবক নামেন। পরে চারজন বাড়ির সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে। যার মধ্যে তিনজনই অস্ত্রধারী। তারা দোতলা বাড়ি লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি করে দ্রুত চলে যান। এ সময় বাড়িটির মূল ফটক তালাবদ্ধ ছিল।
আশপাশের লোকজন জানান, বাড়ির বাসিন্দারা চট্টগ্রাম নগরের বাসায় থাকেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো. তারেক আজীজ জানান, ঘটনার পর ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে একটি বিদেশি নম্বর থেকে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফোন এসেছিল। ঘটনাটি তখন তিনি তেমন গুরুত্ব দেননি। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা এ গুলি করার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা তারেক আজীজ জানান, ‘ইতোমধ্যে আমরা গুলি করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ শুরু করেছি। সিসিটিভি ফুটেজে কয়েকজন আসামি শনাক্ত হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম এখন বলা যাচ্ছে না।’ এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
পুলিশ জানায়, বাড়িটির দোতলার বারান্দার কাছে দুটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। নিচে ৯টি গুলির খোসা এবং একটি তাজা গুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এদিকে গুলির ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় চার যুবক বাড়ির প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢোকেন। তাদের মধ্যে তিনজনের হাতে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। একপর্যায়ে তারা বাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন। পরে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। সবার মুখ মাস্ক পরা অবস্থায় ছিল।
কয়েকটি সূত্র বলেছে, ঘটনাটিতে বিদেশে পলাতক এইট মার্ডার মামলায় আলোচিত সাজ্জাদ আলী খানের শিষ্যরা জড়িত থাকতে পারেন। শীর্ষ এ সন্ত্রাসী বিভিন্ন সময় তার সহযোগীদের মাধ্যমে চাঁদা আদায়ের স্টাইল হাটহাজারীর ঘটনার সঙ্গে মিল রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে কল দিলেও কোনো সাড়া মিলেনি।
মন্তব্য করুন