পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৭ এএম
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

রংপুরে ৮ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত, লক্ষণ ‘চামড়ায় ঘা’

অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া। ছবি : সংগৃহীত
অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া। ছবি : সংগৃহীত

রংপুরের পীরগাছা সদর ও পারুল ইউনিয়নের অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ থাকা ১২ জনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাদের মধ্যে ৮ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা ১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করেছিলাম, এর মধ্যে আটজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে।

এর আগে কালবেলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পশুবাহিত অজানা রোগে মানুষ আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ পেলে নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর। পরে আইইডিসিআরের একটি প্রতিনিধিদল গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর ও পারুল ইউনিয়নের অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ থাকা ১২ জনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। এ ছাড়া প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলও সরেজমিন পরিদর্শন করে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে পীরগাছায় দুজন মারা যান। একই সময়ে চারটি ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক মানুষ আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের অনেকেই অসুস্থ গরুর মাংস খাওয়া বা সংস্পর্শে আসার পর অসুস্থ হন। সেই সময় পরীক্ষাগারে গরুর মাংসের নমুনায়ও অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছিল।

এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ তানভীর হাসনাত জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন রোগীর তথ্য তাদের কাছে আছে। এর মধ্যে ৩০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। অধিকাংশ রোগী অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে সাম্প্রতিক দুই মৃত্যুর কারণ সরাসরি অ্যানথ্রাক্স নয় বলে দাবি করেন তিনি।

চিকিৎসকদের মতে, আক্রান্ত গবাদি পশুর রক্ত, মাংস, শ্লেষ্মা বা নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে এলেই মানুষ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হতে পারে। তবে এ রোগ মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। প্রধান লক্ষণ হলো চামড়ায় ঘা তৈরি হওয়া।

রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রুহুল আমিন বলেন, পীরগাছার পাশাপাশি মিঠাপুকুর ও কাউনিয়াতেও অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা গেছে। আরও আটজনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় পর্যাপ্ত অ্যান্টিবায়োটিক মজুত রয়েছে এবং রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি, গত দুই মাসে অ্যানথ্রাক্সে পীরগাছায় শতাধিক গবাদি পশু মারা গেছে। তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জেলার ১৩ লাখের বেশি গবাদি পশুর মধ্যে এরই মধ্যে ১ লাখ ৬৫ হাজারটিকে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদ, মন্দির ও হাটবাজারে সচেতনতা কার্যক্রম চলছে।’

চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা বলছেন, এ রোগ প্রতিরোধে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুকে নিয়মিত টিকা দেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২১৭৬ মামলা

অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় গুলি

নেত্রকোনায় পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

নির্বাচনে দেশজুড়ে ৯ দিনের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৬

অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে মোশন / তারেক রহমানসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান

তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনা, জাপান ভ্রমণে সতর্কতা জারি করল চীন

সালাহউদ্দিন আহমদ / ক্ষমতায় গেলে কাদিয়ানিদের বিষয়ে সংসদে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি

শেষ হলো খতমে নবুওয়ত সম্মেলন, নতুন ৪ কর্মসূচি ঘোষণা

স্কুলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, বাছাই প্রক্রিয়া যেভাবে

১০

বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা বাংলাদেশের

১১

বিস্ফোরণে ৩০০ মিটার দূরে ছিটকে গেল পুলিশের দেহাংশ

১২

পর্যটনে নতুন আকর্ষণ, শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার এখন প্রমোদতরী

১৩

ঐতিহ্য ফেরাতে সংস্কার হচ্ছে ঢাকার ৪৪ পুকুর-জলাশয়

১৪

গণধর্ষণের শিকার হয়ে থানায় নারী, ভিডিও ভাইরাল

১৫

সৎ মানুষদের রাজনীতিতে ক্যারিয়ার গড়ার আহ্বান জানালেন উপদেষ্টা

১৬

মাঝরাস্তায় বরের গাড়ি আটকে দিলেন সাবেক প্রেমিকা

১৭

বিষধর সাপের ফণা মুখে নিয়ে ঘটালেন অবাক কাণ্ড

১৮

কাশ্মীরে থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ৯

১৯

বিভিন্ন পণ্যে কর ছাড়ের ঘোষণা ট্রাম্পের

২০
X