সিরাজগঞ্জে সালেহা পাগলি নামে এক ভিক্ষুকের ঘরে ২ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। ৬-৭ জন এলাকাবাসী ৫ ঘণ্টাব্যাপী ওই টাকা গণনা করার পর পুলিশের মাধ্যমে ওই ভিক্ষুকের ওয়ারিশের কাছে জমা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর এলাকার মাছুমপুর মহল্লায় এই টাকা গণনা করেন স্থানীয়রা। দুপুর থেকেই টাকা গোনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এতে এক, দুই, পাঁচ, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০, ২০০ এবং ৫০০ টাকার নোট ছিল। সব মিলিয়ে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও অনেক টাকা নষ্ট হয়ে গেছে।
সালেহা মাছুমপুর মহল্লার মৃত আব্দুস ছালামের স্ত্রী। তিনি সালে পাগলি নামেই এলাকায় পরিচিত। তিনি রায়পুর ১নং মিলগেটে শ্রমিকদের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের বারান্দায় একাই থাকতেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হাসু জানান জানায়, আমি সকালে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি অনেক লোকজন ছিল। তবে সেখানে ওই পাগলি ছিলেন না। সেখানে একটি ছোট ও একটি বড় বস্তা পাই। বস্তা খুলে দেখি, ভেতরে কাপড় দিয়ে মোড়ানো খুচরা পয়সা। তখন সবাই বলে, সালেহা বেগম নামে ওই নারীর টাকা। পরে স্থানীয় মুরুব্বিদের ডেকে তাদের সামনে টাকার বস্তা দুটো উদ্ধার করি।
ওই ভিক্ষুক মাছুমপুর মহল্লার একটি ঘরে থাকে। আমরা তার কাছে বস্তা দুটো নিয়ে গেলে তিনি বলেন, সেগুলো তার। পরে এলাকার লোকজনকে দায়িত্ব দেই এই টাকাগুলো গণনার জন্য। ওরা সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে টাকাগুলো গণনা করে। পরে সদর থানার পুলিশ এলে তাদের সামনে টাকাটা সালেহার মেয়ের নামে গ্রামের একজন মাতব্বরের হেফাজতে দেওয়া হয়।
ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল শেখ বলেন, ৬-৭ জন মিলে টাকাগুলো গণনা করেছি। পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী টাকা গণনা করা হয়েছে। টাকা এমনভাবে পুঁটলি করে রেখেছে। ময়লা-পচে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে।
সিদ্দিক হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, উনার মা-বাবা দুজনই ভিক্ষা করেছে। তিনিও ছোটোবেলা থেকেই ভিক্ষা করেন। ২০ বছর ধরেই ভিক্ষা করেন।
সালেহা বেগমের মেয়ে স্বপ্না খাতুন বলেন, ‘আমার মা পাগলা টাইপের। জায়গায় জায়গায় ঘুরে টাকা-পয়সা পাইছে, সেগুলো পোটলা করে রেখেছে। আমাদের কাউকে বলে নাই। আমাদের কোনো কথা ভালোমতো শোনে নাই। নিজে যেটা বুঝেছে সেটাই। সারাদিন বাইরে থেকে রাতে মিল গেটের বারান্দায় ঘুমিয়েছে।’
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পতিন কুমার বণিক বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি টাকা গণনা করা হচ্ছে। আমি বেশ কিছুক্ষণ সেখানে থেকে টাকা গোনা শেষ হলো। দেখা গেল নোট টাকা ৯৫ হাজার, আর বাকিগুলো কয়েন। মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা। বিষয়টা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার একমাত্র ওয়ারিশ মেয়ের জিম্মায় টাকাগুলো দেওয়া হয়।’
মন্তব্য করুন