ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

উপদেষ্টার পরিদর্শনের পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নেই যানজট

উপদেষ্টার পরিদর্শনের পর যানজটমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক। ছবি : কালবেলা
উপদেষ্টার পরিদর্শনের পর যানজটমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক। ছবি : কালবেলা

সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেহাল অংশ পরিদর্শনের পর সেখানে ফিরেছে শৃঙ্খলা। স্বাভাবিক হয়েছে যানজট, কমেছে দুর্ভোগ।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত অংশজুড়ে দীর্ঘ যানজট ছিল নিত্যদিনের চিত্র। কিন্তু কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। সড়ক উপদেষ্টার পরিদর্শনের পর একদিকে যেমন দ্রুতগতিতে এগিয়েছে মেরামতকাজ, তেমনি তৎপরতা বেড়েছে হাইওয়ে পুলিশেরও।

হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা বিশ্বরোড মোড় ও আশুগঞ্জ গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এ ছাড়াও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখে ১৫০ মিটার পর্যন্ত অস্থায়ী সড়ক বিভাজক তৈরি করা হয়েছে। আর এসব সমন্বিত পদক্ষেপে বর্তমানে এ মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও নেই যানজট।

রোববার (১২ অক্টোবর) সরেজমিন দেখা যায়, সড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই। তবে গাড়ির গতি কম।

বিশ্বরোড মোড়ে ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখে ১৫০ মিটার পর্যন্ত অস্থায়ী বিভাজক তৈরি করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সকাল থেকে উপস্থিত থেকে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ তদারক করছেন। সড়ক মেরামতের কাজও শেষের দিকে।

এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের ধীর গতির কারণে বিশ্বরোড মোড় এলাকার সড়কের বেহাল দশা হয়, যা কয়েকদিন ধরে মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। আর ভাঙাচোরা সড়কের কারণে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। তবে উপদেষ্টার পরিদর্শনের পর থেকে বিশ্বরোড মোড়ে যানজট পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরলেও এর স্থায়ী সমাধান চান তারা।

এ অবস্থায় স্থায়ী সংস্কার ও দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করার পাশাপাশি বিশ্বরোড মোড়ে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড এবং সড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলোও উচ্ছেদ চায় এলাকাবাসী। একই সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের তৎপর ভূমিকা পালনেরও দাবি জানান তারা।

গত বুধবার সরাইল বিশ্বরোড এলাকা পরিদর্শনে যান সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি মহাসড়কের পূর্ব পাশের বাইপাস সড়কটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে এখনো সেখানে অবৈধ বাজার ও দোকানপাট আছে। এ ছাড়া বিশ্বরোডের পশ্চিম পাশে এখনো সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড ও অর্ধশতাধিক টং দোকান রয়েছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে বেহাল সড়কের তদারকির জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন সড়ক উপদেষ্টা। তাদের প্রকল্প এলাকায় থেকে যানজট নিরসনে ও সরাইল বিশ্বরোড অংশের মেরামতকাজের তদারকিসহ সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এলাকায় না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন উপদেষ্টা।

এর আগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে প্রতিদিনই সৃষ্টি হওয়া দীর্ঘ যানজট নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর থেকে কার্যকর উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ৪ অক্টোবর বিকেল থেকে সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় মেরামতের কাজ শুরু করে সওজ।

স্থানীয় বাসিন্দা তাসলিম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজটি বছরের পর বছর ধরে চলছে। সময় সময় নির্মাণকাজও বন্ধ থাকে। এতে করে আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়। বৃষ্টি হলে সেসব খানাখন্দ পার হয়ে যান চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়ে। কোনো কোনো জায়গার খানাখন্দে যানবাহন উল্টে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যা পার্শ্ববর্তী জেলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।’

সরাইল বিশ্বরোড এলাকা পরিদর্শনে এসে সড়ক উপদেষ্টা নিজেও দীর্ঘসময় যানজটে আটকা থাকেন। পরে গাড়ি ছেড়ে মোটরসাইকেলে চড়ে গন্তব্যে যান।

এ বিষয়ে সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন, ‘সড়কের নির্মাণকাজের কারণে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। আমরা হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যানজট নিরসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

জানতে চাইলে আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ‘আশুগঞ্জ গোলচত্বর এবং সরাইল-বিশ্বরোড মোড় অংশের নির্মাণকাজ আগামী জানুয়ারির মধ্যেই শেষ করার চেষ্টা চলছে। পুরো প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। বর্তমানে কাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ। বর্ধিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

২০২০ সালে আশুগঞ্জ নৌ বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন সড়ক উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মদ পানে মহা সর্বনাশ, ৬ জনের মৃত্যু

বড় ভাই মির্জা ফখরুলের মতোই কবিতা দিয়ে শুরু করলেন মির্জা ফয়সল

সোনারগাঁয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন

মা ইলিশ রক্ষায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার টহল

ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির মাদকবিরোধী আলোচনা সভা

নিউমার্কেটে চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার ১

আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করায় ছাত্রশিবিরের নিন্দা

শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের বিবৃতি

কক্সবাজার আদালতে বিচারকের মোবাইল-মানিব্যাগ চুরি

পাঠ্যপুস্তক ছাপার দায়িত্ব হস্তান্তর ‘মাথাব্যথায় মাথা কাটার মতো সিদ্ধান্ত’ : টিআইবি

১০

বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে ভারতকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

১১

মৌসুমি বায়ুসহ আগামী ৪ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস

১২

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা

১৩

এবার উপদেষ্টাদের নিয়ে মুখ খুললেন সামান্তা শারমিন

১৪

ঢাকায় আসছেন জাকির নায়েক

১৫

ছক্কা মেরে ইতিহাস গড়লেন স্মৃতি মান্ধানা!

১৬

উপদেষ্টা রিজওয়ানাকে এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি

১৭

একটি দল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় : কফিল উদ্দিন 

১৮

চাকসু নির্বাচনে নতুন প্রত্যয়ে ছাত্রদল

১৯

বন্দর ব্যবসায়ী নেতারা / মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধের ষড়যন্ত্রের অংশ

২০
X