রংপুরের তারাগঞ্জ ওয়াকফ এস্টেট কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. মাহবুব রশিদের বিরুদ্ধে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে ১৮ বছর ধরে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। এনটিআরসিএ দপ্তর তার সনদকে ভুয়া বলে প্রমাণ করলেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ.এস.এম. আব্দুস সালাম আইনি ব্যবস্থা নেননি। উল্টো তিনি ইস্তফাপত্র গ্রহণের মাধ্যমে সরকারি অর্থ তছরুপে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য মতে, মাহবুব রশিদ ২০০৫ সালের এনটিআরসিএ নিবন্ধনে অংশ নেন। কিন্তু তার কামিল পরীক্ষার ফল প্রকাশের তারিখ ছিল নিবন্ধনের শেষ সময়ের পর, এবং তিনি ভুল বিষয় (হাদিস) নিয়ে আবেদন করেন, যেখানে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল আরবি সাহিত্য বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কামিল ডিগ্রি। ফলে তার আবেদন বৈধ ছিল না।
পরে ২০২০ সালে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. রোকসানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে তার সনদ জাল প্রমাণিত হয়। ২০২৫ সালের মার্চে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষও আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল বলে নিশ্চিত করে এবং মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু অধ্যক্ষ তা না করে উল্টো মাহবুব রশিদের ইস্তফা অনুমোদনের পদক্ষেপ নেন।
অফিস সূত্র জানায়, মাহবুব রশিদ ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৯ সালে এমপিওভুক্ত হন। পরে ২০২৩ সালে তিনি পদোন্নতি পান সহকারী অধ্যাপক পদে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মাহবুব রশিদ বলেন, আমি চাকরির ইস্তফা দিতে চেয়েছিলাম, তবে পারিবারিক সিদ্ধান্তে তা স্থগিত আছে। তবে জাল সনদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বলেন, তিনি স্বেচ্ছায় অবসর নিতে চেয়েছিলেন, বিষয়টি কমিটিতে আলোচনা হয়েছে কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ভুয়া সনদে চাকরি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইন অনুযায়ী প্রাপ্ত বেতন সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হয়। অধ্যক্ষ কেন ব্যবস্থা নেননি, তা লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের মার্চ ও আগস্টে অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং অধ্যক্ষের মদদে এডহক কমিটি সেপ্টেম্বর মাসে তার ইস্তফা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে সরকারি অর্থ আত্মসাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
মন্তব্য করুন