বন্ধুত্বের টানে সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়েছেন মার্কিন নাগরিক তেরি পারসন। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার এক রাজমিস্ত্রির ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি চলে এসেছেন বাংলাদেশে। এমন বন্ধুত্ব দেখে অবাক এলাকাবাসী। তাকে এক নজর দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসছেন উৎসুক জনতা।
গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের চর বালশা গ্রামের বাসিন্দা সেতু মোল্লা পেশায় একজন ভ্যানচালক ও রাজমিস্ত্রি। সেতু মোল্লা কনটেন্ট তৈরি করে নিজের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন। প্রায় ২৫ দিন আগে তার একটি ভিডিওতে লাইক দেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ব্যবসায়ী তেরি পারসন। এরপর শুরু হয় তাদের কথোপকথন, গড়ে ওঠে আন্তরিক বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের টানেই তেরি পারসন পাড়ি দেন হাজার হাজার মাইল দূরের বাংলাদেশে।
গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ভোরে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বন্ধুকে রিসিভ করেন সেতু মোল্লা। এরপর তাকে নিয়ে নিজের গ্রামে ফেরেন এবং নিজ হাতে চালানো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে দেখান বিদেশি অতিথিকে। তেরি পারসনের আগমনে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে পুরো গ্রাম। সবাই মিলে ছবি তোলেন, গল্প করেন, আর অতিথিকে স্বাগত জানান।
মার্কিন নাগরিক তেরি পারসন জানান, এটি তার জীবনের সবচেয়ে ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তা ও ভালোবাসায় তিনি মুগ্ধ। স্থানীয় খাবারের মধ্যে মুরগির মাংস, চা এবং কফি খেয়ে তিনি বেশ আনন্দিত। বিশেষ করে গ্রামের শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে দারুণ উপভোগ করছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা ভ্রমণ। বাংলাদেশের মানুষ খুব আন্তরিক ও সরল। আমেরিকায় জীবনযাপন অনেক ব্যয়বহুল ও যান্ত্রিক, কিন্তু এখানে মানুষ খুব সাধারণভাবে বাঁচে—এটাই সবচেয়ে সুন্দর বিষয়।’
জানা গেছে, মার্কিন এই নাগরিক আরও ১১ দিন বাংলাদেশে থাকবেন। এরপর নিজ দেশে ফিরে যাবেন। তবে যাওয়ার আগে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আবারও ৬ মাস পর বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এবং নিজের বন্ধুদের বলবেন—‘বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য অসাধারণ একটি দেশ।’
এদিকে বন্ধুত্বের টানে রাজমিস্ত্রির বাড়িতে আসা মার্কিন নাগরিক তেরি পারসন এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে। তাদের বন্ধুত্বের এই গল্প প্রমাণ করে, মনের টানই পারে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষকে ছুটে আনতে।
মন্তব্য করুন