

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় অপহরণের পর নির্মমভাবে নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র তুহিন (১৯) সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মারা গেছেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত তুহিন উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে এবং বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
বুড়িচং থানার ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের মা ফেরদৌসী আক্তার অভিযোগ করে জানান, তার ছেলে তুহিন (১৯) বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। পূর্ববিরোধের জেরে অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। গত ২০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কামাল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে তুহিনকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এরপর ১নং অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বাবুর বাড়ির গোবিন্দপুর পূর্ব পাশের বিল্ডিং ঘরে নিয়ে গিয়ে লোহার রড ও এসএস পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এতে তার হাত-পা ভেঙে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। পরে সে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে। এ সময় অভিযুক্তরা তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং তার বাবা-মাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে বুড়িচং উপজেলা হাসপাতালে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে গত ৭ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বেলা ১১টায় তুহিনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় তুহিনের মা ফেরদৌসী আক্তার বাদী হয়ে গত ২০ অক্টোবর বুড়িচং থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। অভিযুক্তরা হলেন—গোবিন্দপুর গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম বাবু (৪৫), মো. নাফিজ উদ্দিন (১৯), শ্রীপুর গ্রামের মো. জহির (৪২) এবং আবদুল আলিম (৪৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক বলেন, অভিযোগ দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে মামলাটি রুজু করা হয়। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন