

গাজীপুর পুবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।
জিএমপি অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক কারণে মো. শেখ আমিরুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত (লাইনওআর) করা হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের উদ্ধৃতি নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যম ফটোকার্ড করে। সেই ফটোকার্ডে ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম মন্তব্য করেন ‘আগে গণভোট দরকার যে স্বাধীনতাবিরোধীদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না’।
জানা গেছে, গত ২০ অক্টোবর পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর মহানগর মজলিসের শূরার সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আমজাদ হোসেন এবং পূবাইল থানা জামায়াতের নায়েবে আমির আইনজীবী মোহাম্মদ শামীম হোসেন মৃধা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম থানায় যোগদানের পর থেকেই একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন এবং জামায়াত ও নেতাদের উদ্দেশ্য করে বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। এছাড়াও তিনি ওই রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিরাপত্তা ও প্রটোকল নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন।
জামায়াতের অভিযোগ, সম্প্রতি তিনি জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, যা প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নষ্ট করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর মহানগরীর নায়েবে আমির হোসেন আলী বলেন, আমরা ওসির বক্তব্যে গভীরভাবে কষ্ট পেয়েছি। একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা এভাবে একটি দলের শীর্ষ নেতাকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করতে পারেন না। আমরা কমিশনার বরাবর অভিযোগ করেছি এবং চাই, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সমপরিমাণ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগটির আলোকে প্রশাসন যেন নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়।
জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান কালবেলাকে ফোনে বলেন, ওসি শেখ আমিরুল ইসলামকে আমরা প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছি। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। অভিযোগ সাপেক্ষে যদি প্রমাণিত হয়, আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রজাতন্ত্রের চেয়ারে বসে একজন পুলিশ অফিসার জনগণের ট্যাক্স ও ভ্যাটের টাকায় চলে; সেই ব্যক্তি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা বা আমিরকে নিয়ে অহেতুক মন্তব্য করতে পারেন না। এ ধরনের আচরণ শৃঙ্খলার পরিপন্থি। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে এবং প্রমাণ সাপেক্ষে বিভাগীয় বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন