উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। রোববার (১৮ জুন) সকাল ৬টা ও ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট। প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।
কয়েকদিনের টানা, থেমে থেমে বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ধু ধু বালুচর পানিতে টইটম্বুর হয়ে পড়েছে। এতে তিস্তার চর ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষতি হয়েছে বাদাম, পাট ও মৌসুমি ফসলের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া পয়েন্ট সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিকেল থেকে পানি বাড়তে শুরু করে। পরে সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সেমি নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহের রেকর্ড করা হয়। সন্ধ্যার পর কিছুটা কমলেও রোববার ভোর থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে পানির তোড়। ভোর ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৩ সেমি নিচে ও সকাল ৯টায় ২৩ সেমি নিচে রেকর্ড করা হয়। তবে বিকেল ৩টা থেকে পানিপ্রবাহ কিছুটা কমে বিপদসীমার ২৮ সেমি নিচ দিয়ে হচ্ছে।
এতে ডালিয়ার ভাটি এলাকায় ধীরে ধীরে পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ তিস্তাপাড়ের মানুষ। চর এলাকায় চাষাবাদের জন্য বসবাসরত লোকজন গ্রাম এলাকায় চলে আসছেন। নৌকায় করে চরের ফসল নিয়ে আসছেন উঁচু এলাকায়।
তিস্তা গোবর্ধন এলাকার কৃষক রহিম মিয়া বলেন, কয়দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। কালকেও পানি বাড়ছিল। আজকে আবারও বাড়ছে। আমাদের বাদাম ক্ষেত, পাটক্ষেত ডুবে গেছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নিচু এলাকায় পানি ঢুকছে। আমরা স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যানদের সবশেষ খবর রাখতে বলেছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া আমরা জরুরি যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সজাগ রয়েছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে তিস্তার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। মহিষখোচা এলাকায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বেরিবাঁধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভাঙনপ্রবণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
মন্তব্য করুন