

বেড়েছে শীতের দাপট। শীত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে শীতজনিত রোগ। যার মধ্যে অধিকাংশ শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, শরীয়তপুর, বি-বাড়িয়া, মুন্সীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলার শিশুরা ব্যাপক হারে রোটা-ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁদপুরের মতলব আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ড ডায়রিয়া রোগীতে ভরপুর, হাসপাতালের বারান্দায়ও অনেক রোগী। রোগীদের অধিকাংশই শিশু। হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা তবুও রোগীদের কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
আইসিডিডিআর,বি সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিডিডিআর,বি চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৮৫৬ জন। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ২৫৭ জন। প্রতি ঘণ্টায় রোগী ভর্তি ১১ জন। শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী ৩ হাজার ৩৭০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু রোগীই শতকরা ৮৭ জন, যা ভর্তি রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তিনগুণের বেশি। তবে কারও মৃত্যু হয়নি।
প্রায় অর্ধেক রোগীই কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ থাকায়, দূষিত খাবার ও দূষিত পানি পান করায় শীতে এত হারে শিশুরা শীতকালীন ডায়রিয়া বা রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
মতলব আইসিডিডিআর,বি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ২৭৩ জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪৬ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলার ১৬৯ জন, কচুয়া উপজেলার ১৮৭ জন, মতলব উত্তর উপজেলার ১১৩ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১৪২ জন, শাহারাস্তির ৮০ জন, হাইমচর ৩৪ জন, কুমিল্লার বরুড়ার ১৮৯ জন, ব্রাহ্মণপাড়ার ৭৬ জন, বুড়িচংয়ের ১৪৩ জন, চান্দিনার ১৬০ জন, কুমিল্লা সদরের (আদর্শ) ১২৬ জন, কুমিল্লা সদরের (দক্ষিণ) ৯৯ জন, চৌদ্দগ্রামের ৪৭, তিতাসের ১০৫ জন, দাউদকান্দির ২০৩ জন, দেবিদ্বারের ২৪০ জন, হোমনার ৭৬ জন, লাকসামের ১০৯, মেঘনার ৫ জন, মনোহরগঞ্জের ৩৬ জন, মুরাদনগরের ২২৮৯ জন, নাঙ্গলকোটের ৪৬ জন, লক্ষ্মীপুর সদরের ২০৫ জন, কলমনগরে ৩৮ জন, রায়পুরের ৮৩ জন, রামগঞ্জের ১১৩, নোয়াখালী সদরের ৩২ জন, বেগমগঞ্জের ১৯ জন, চাটখীলের ৪৯ জন, হাতিয়ার ৪ জন, সোনাইমুড়ীর ১৮ জন, সুবর্ণচরের ৪ জন, শরীয়তপুরের সখীপুর উপজেলার ৭৯ জন, বেদরগঞ্জের ৪ জন, রামগতি ১২ জন,গজারিয়া ১১জন,মুন্সিগঞ্জ সদর ৬জন, সিদ্দিরগঞ্জের ২ জন, কবিরহাট ৪ জন, দৌলতখান ১ জন, কসবা ৪৪ জন,নবীনগর ৮ জন, দেওয়ানগঞ্জ ১ জন, বাঞ্চারামপুর ১২ জন, রাজারহাট ১ জন, বাকিরা নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফেনী, ভোলা আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে।
আইসিডিডিআর,বির মতলব রিচার্চ সেন্টারের প্রধান ডা. মো. আল ফজল খান কালবেলাকে বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং শিশুদের প্রতি যত্নবান থাকলে এ রোগ এড়ানো সম্ভব।
মন্তব্য করুন