বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তিস্তার চরে নিয়ে স্বামীর প্রেমিকাকে হত্যা, দম্পতির যাবজ্জীবন

জেলা ও দায়রা জজ আদালত, লালমনিরহাট। ছবি : কালবেলা
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, লালমনিরহাট। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় স্বামী ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে এ রায় দেন লালমনিরহাট আদালতের জেলা ও দায়রা জজ মিজানুর রহমান। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে দবিয়ার রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম (৩৩)।

মৃত প্রেমিকা কবিরাজ শাহিনা বেওয়া আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া শিল্পকুঠি এলাকার ভ্যানচালক মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী এবং একই উপজেলার পূর্ব ভেলাবাড়ি গ্রামের একরামুল হকের বোন।

আদালতের প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া শিল্পকুঠি এলাকার ভ্যানচালক মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী শাহিনা বেওয়া স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট ভাই একরামুল হকের বাড়ির পাশে বাড়ি করে বসবাস করত। অন্যের বাড়িতে ঝিঁয়ের কাজ ও কবিরাজি করে এক ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে দেন শাহিনা বেওয়া। কবিরাজি করতে গিয়ে তার দবিয়ার রহমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর এক পর্যায়ে শাহিনা বেওয়া বিয়ের জন্য চাপ দিলে ক্ষিপ্ত হন প্রেমিক দবিয়ার রহমান। বিষয়টি জানাজানি হলে দবিয়ার রহমানের স্ত্রী শাহিনা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে শাহিনা বেওয়াকে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর ডেকে নেয়। পরে তারা কৌশলে ওইদিন রাতে শাহিনা বেওয়াকে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি পাকার মাথা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তিস্তা নদীর চরে নিয়ে হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে সটকে পড়ে। পর দিন ৭ নভেম্বর স্থানীয়দের খবরে সদর থানা পুলিশ শাহিনা বেওয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ওই দিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মৃত শাহিনা বেওয়ার ছোট ভাই একরামুল হক। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) মশিউর রহমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে অভিযুক্ত দবিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।

গত ২০২১ সালের ৩১ মার্চ অভিযুক্ত দবিয়ার ও তার স্ত্রী শাহিনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযুক্তদের উপস্থিতিতে সোমবার মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, কবিরাজ শাহিনা বেওয়া হত্যার দায়ে আসামি দবিয়ার রহমান ও শাহিনা বেগম প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

রায়ে আদালত আরও উল্লেখ করেন, আসামিদের নাবালক সন্তানরা এতিম হবে মর্মে তাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়নি। তাদের হাজতবাসের সময় সাজা থেকে বাদ যাবে বলেও উল্লেখ করেন আদালত।

আদালতের সরকারি কৌঁশলী (পিপি) অ্যাডভোকেট আকমল হোসেন আহমেদ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিয়ানমারে বৌদ্ধদের উৎসবে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ৪০

আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কেঁদে কেঁদে দোয়া করলেন হাদি

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে ভুল উদ্ধৃতি সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

‘আবরারের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অনেকের গাত্রদাহ দেখেছি’

সৌন্দর্যবর্ধনে সাভার উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

ছেলের দায়ের করা মামলায় বাবাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননা, সিএমপির জরুরি সতর্কবার্তা

জাতীয়করণ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি তারেক রহমানের বার্তা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

খেলা শেষ হতেই রেফারির ওপর হামলা

১০

জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের জন্য সুখবর

১১

আদালতের ‘ন্যায়কুঞ্জে’ খাবার হোটেল, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে উচ্ছেদ

১২

অ্যানথ্রাক্স ছড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চলে, রংপুর-গাইবান্ধায় সরেজমিনে তদন্ত শুরু

১৩

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা / জানলে যে সব বলে দিতে হবে সেটা তো না

১৪

শেখ হাসিনা ও কামালের নির্বাচনী যোগ্যতা নিয়ে যা জানা গেল

১৫

ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে চাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

১৬

খুন করে আল্লাহর ভয়ে নামাজ পড়ে ক্ষমা চান হত্যাকারীরা

১৭

ইংলিশদের বিপক্ষে মারুফাদের লড়াই করে হার

১৮

পিআর নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব : চরমোনাই পীর

১৯

ফুটবলকে বিদায় বললেন মেসির আরও এক সতীর্থ

২০
X