পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড়ের নাম শুনলেই বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে থাকে কলাপাড়া উপজেলার মানুষ। উপকূলীয় এলাকার এসব মানুষ আকাশে মেঘ দেখলেই যেন আর শক্তি পায় না। হতাশা আর আতঙ্ক বিরাজ করে তাদের চোখে মুখে। এ এলাকায় শক্ত কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় এমন আতঙ্ক কাজ করে বলে জানায় স্থানীয়রা।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় রাত থেকে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে। পাশাপাশি উত্তাল হতে শুরু করেছে সমুদ্রসৈকত। সিপিপি তারা সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে ফলে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গইয়াতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, ‘যখনি ঘূর্ণিঝড়ের নাম কয় টেলিভিশনে তখনি মনডার মধ্যে ছটফট করে ওঠে। সবসময় ডর করে। রাইতেই ঘুম হারাম হয়ে যায়। পোলাপান নিয়া থাকি উজাগার (সজাগ)। একটু শক্ত পোক্ত বেড়িবাঁধ নেই মোগো এলাকায়। বড় কোনো ঝড় আইলে ভাসাইয়া নিয়া যায় মোগো বাড়িঘর।’
জানা গেছে, বিগত দিনে উপকূলীয় অঞ্চলে বয়ে গেছে অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এলাকার বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তেমন সংস্কারকাজ হয়নি। ২০০৭ সালেল বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তখনকার সময় মোটামুটিভাবে বেড়িবাঁধ থাকলেও ইয়াসে তছনছ করে দিয়েছিল বাকিটা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রসাশন মাঝে মাঝে কিছু কাজ করলেও তা অপ্রতুল।
স্থানীয়রা দাবি, ঝড় জলোচ্ছ্বাসে নির্বিঘ্নে রাত কটাতে পারে সেই জন্য বেড়িবাঁধ শক্ত করে যেন বাঁধ দেওয়া হয়।
উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। এবার হামুন ঘূর্ণিঝড়ে কত ক্ষতি করে আল্লাহ জানে। আমরা শক্ত বেড়িবাঁধ মেরামত চাই। যেনতেন কোনো কাজ চাই না।
মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুরের বাসিন্দা মো. ইমরান বলেন, বন্যার কথা শুনলে মনটা খারাপ হয়ে পড়ে। জোয়ার হলেও ভাসি আর বন্যা হলে তলিয়ে যায়। আমাদের প্রাণের চাওয়া যেন বেড়িবাঁধ মেরামত করে দেওয়া হয়।
মহিপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ফজলু গাজী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে তাণ্ডব চালায় এ এলাকায়। ফলে বেড়িবাঁধ তছনছ হয়ে পড়ে। এ এলাকার প্রায় ২ কিমি বেড়িবাঁধ ধ্বংস হয়ে যায়। কিছুটা কাজ হয়েছে বাকি কাজগুলো করার জন্য আমরা পাউবোর কাছে আবেদন দিয়েছি। দ্রুতই সেই কাজ শুরু হবে আশা করছি।
পাউবোর চলতি দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলিদ বলেন, এ এলাকার বেড়িবাঁধ মেরামত করার কাজ প্রতিবছর করছি। বাকি যা আছে তাও দ্রুত শুরু করব।
মন্তব্য করুন