নড়াইলে পারিবারিক কলহের সমাধান না করায় ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজীকে (৫০) হত্যা করেছেন তারই ছোট ভাই ইকরামুল গাজী (৪০) ও তার সহযোগী তুফান।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ইকরামুল গাজীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজীর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন।
এর আগে বুধবার (২১ জুন) রাতে অভিযান চালিয়ে নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়নের মধুরগাতী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ইকরামুল গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সদর থানার ওসি ওবাইদুর রহমান বলেন, দেলোয়ার গাজী হত্যার ঘটনায় তার ছোট ভাই ইকরামুল গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত তুফানকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন বলেন, ইকরামুল গাজীর স্ত্রীর সঙ্গে দেলোয়ার গাজীর স্ত্রীর বিভিন্ন সময় সাংসারিক ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হতো। ঝগড়া-বিবাদের বিষয়টি ইকরামুলের স্ত্রী তাকে জানালে প্রতিকার চেয়ে বড় ভাই দেলোয়ার গাজীর কাছে একাধিকবার নালিশ করেন ইকরামুল। কিন্তু এ বিষয়ে দেলোয়ার গাজী কোনো গুরুত্বরোপ করেননি। এতে ইকরামুলের স্ত্রী রাগ করে তার বাবার বাড়ি চলে যান এবং ঘটনার সমাধান না হলে সংসার করবেন না বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে ইকরামুল তার বন্ধু তুফানের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং দেলোয়ার গাজীকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ মে দেলোয়ার গাজীকে ইকরামুলের বন্ধু কৌশলে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় ইকরামুল ও তার অপর সহযোগী একত্রে তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ার গাজীর ভ্যানে উঠে আটঘরা গ্রাম থেকে নাউসোনা মহাশ্মশানগামী রাস্তা দিয়ে আসতে থাকেন। পথে নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের মৎস্যঘেরের কাছে আসার পর তুফান তার কাছে থাকা গামছা দিয়ে পেছন থেকে দেলোয়ার গাজীর গলা পেঁচিয়ে ধরেন। পরে দুইজন দুই পাশ থেকে গামছা টেনে শ্বাসরোধ করে দেলোয়ার গাজীকে হত্যা করেন।
সাদিরা খাতুন বলেন, এই হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে নিতেই ইকরামুল ও তার বন্ধু ঘটনার ওই রাতে পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরের অভয়নগরের বুনোরামনগর এলাকায় দেলোয়ার গাজীর ভ্যানটি রেখে পালিয়ে যান। ইকরামুলের সহযোগীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
এ ঘটনায় ৩১ মে দেলোয়ার গাজীর ভাই গাজী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মন্তব্য করুন