নওগাঁর রাণীনগরে ৮টি ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন রোপা-আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাণীনগরের ধান ক্ষেতগুলোতে কৃষক-শ্রমিকদের ধান কাটতে দেখা যায়। ক্ষেতজুড়ে সোনালি রং বলে দিচ্ছে গ্রামবাংলার কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা রোপা-আমন ধান চাষের দৃশ্য। মাঠে মাঠে বাতাসে দুলছে সোনালি ধানের শিষ। চলতি মৌসুমে রোপা-আমন ধানের ভালো ফলনের বুকভরা আশা করছে চাষিরা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতিতে আগাম ধান চাষ করা হলেও সেপ্টেম্বরে শেষ সপ্তাহে মালঞ্চি নামক স্থানে রাণীনগর আত্রাই সড়কে পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ১৭৫ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেষ মুহূর্তে রাণীনগরে রোপা-আমন ধানের ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা।
জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষ হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে বন্যায় কিছু ক্ষতি হলেও গোনা ও সদর ইউনিয়ন বাদে প্রায় সব ইউনিয়নে ধানের ফলন ভালো হবে এমনটাই বলছেন কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে রাণীনগর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপ ১৮৫টি, বিদ্যুৎচালিত ব্যক্তিগত ৮৫টি, ডিজেল ৩০টি, নদী থেকে এলএলপি বিদ্যুৎচালিত পাম্প ১২টির মাধ্যমে আবাদি রোপা-আমন ধান ক্ষেতে সেচ প্রদান করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক সময়ে চারা লাগানো নিবিড় পরিচর্যা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথাসময়ে সেচ দেওয়া, সার সংকট না থাকায় উপজেলায় চলতি মৌসুমে রোপা-আমন ধানের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান কাটা মাড়া আংশিকভাবে শুরু হয়েছে।
উপজেলার দূর্গাপুর প্রামানিক পাড়া গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, আমি ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। কিছু ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ৬ বিঘা জমিতে বিআর ৯০ জাতের ধান ছিল। কাটা মাড়াইয়ের পরে ফলন তেমন ভালো হয়নি। বাজারদরও কম। প্রতি মণ ধান ১ হাজার ২০ টাকা মণে বিক্রি করেছি। তবে অন্যান্য ধানের ভালো ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি আফিসার কৃষিবিদ ফারজানা হক জানান, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। বন্যায় কিছু ক্ষতি হলেও শেষ মুহূর্তে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে চাষিরা ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছে।
মন্তব্য করুন