রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম প্রথম পর্যায়ের শেষ (সপ্তম) চালান কঠোর নিরাপত্তায় সফলভাবে ঢাকা থেকে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছেছে।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে গাড়িবহর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করলে প্রকল্প কর্মকর্তারা স্বাগত জানায়।
এর আগে ইউরেনিয়ামের এ চালান ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে। রূপপুর প্রকল্প সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাশিয়া থেকে পূর্ববর্তী ছয়টি চালানের মতোই বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছে ইউরেনিয়াম। শুক্রবার এ চালান ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয়ে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছেছে।
ঈশ্বরদীর থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়ামের প্রথম পর্যায়ের শেষ চালান সড়কপথে রূপপুরে পৌঁছে। সড়কপথে ইউরেনিয়ামের চালানবাহী গাড়িবহর আসার সময় কিছুক্ষণের জন্য সড়কে অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম, ৬ অক্টোবর দ্বিতীয়, ১৩ অক্টোবর তৃতীয়, ২০ অক্টোবর চতুর্থ, ২৭ অক্টোবর পঞ্চম ও ৩ নভেম্বর ষষ্ঠ চালান ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছে।
প্রথম পর্যায়ের মোট সাতটি চালানের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সবকটি চালান নির্বিঘ্নে রূপপুরে এসেছে। এ সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছর ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
জানা গেছে, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া তিন বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। প্রতিদিন জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) এবং পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পরপর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে। ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতেই ধারাবাহিকভাবে চালানের জ্বালানি রাশিয়া পাঠিয়ে দিচ্ছে।
দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থের ১০ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার। ঋণসহায়তা হিসেবে রাশিয়া ৯০ শতাংশ প্রদান করছে। বাংলাদেশ সরকার ও রাশান ফেডারেশনের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
মন্তব্য করুন