ফেনীতে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলাজুড়ে মাঠে মাঠে চলছে এখন ধান কাটার উৎসব। চাষি ও মৌসুমি ধান কাটার শ্রমিকদের পদচারণায় মুখর পুরো ফেনী। জেলার ছয় উপজেলায় এবার রোপা আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. একরাম উদ্দিন।
একদিকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ, অন্যদিকে ধানের ফলন হয়েছে বাম্পার। তবুও উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় মন ভালো নেই কৃষকদের। জেলার একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান ও চাল উৎপাদন হবে এবার তবে আগের চেয়ে খরচ বেড়ে গেছে অনেক বেশি। ফলে কৃষকরা ধান ও চালের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। জেলায় মাঠ থেকে কৃষকরা প্রতি মণ ধান বিক্রি করছেন ১ হাজার থেকে ১১০০ টাকায়। খাদ্যগুদামে প্রতি মণ ধান কেনা হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা করে।
এদিকে জেলার অনেক প্রান্তিক কৃষকদের অভিযোগ, সরকারের দেওয়া সার ও বীজ সঠিকভাবে পাইনি তারা। সরকার কৃষকদের জন্য সার ও বীজ দিলেও জনপ্রতিনিধিরা তা সঠিকভাবে বণ্টন করেনি প্রকৃত কৃষকদের মাঝে।
কৃষক মো. তফজল মিয়া বলেন, এবার ১০ কানি আমন ধান করেছি বীজতলা থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। ফলন ভালো হয়েছে সত্য তবে ব্যয়ের সাথে আয়ের হিসাব মিলছে না। এক কেজি গরুর মাংস কিনতে হলে একমন ধান বিক্রি করতে হবে। তাহলে আমরা খাব কি চলবো কিভাবে।
আরেক প্রান্তিক কৃষক ইসহাক মিয়া বলেন, সারের দাম বেশি, কামলার দাম বেশি, বলতে গেলে কৃষি ক্ষেত্রে সবকিছুর দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ কিন্তু ধানের দাম তেমন একটা বাড়েনি। লোকসান দিয়ে তো আর চাষ করা সম্ভব নয়। এভাবে হলে চাষাবাদ ছেড়ে দিতে হবে। সরকারের দেওয়া বীজ এবং সার আমরা পাইনা অথচ এই এলাকায় আমরা প্রকৃত কৃষক।
ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, ফেনী জেলায় এবার প্রায় ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এরই মধ্যে আমন ধান কাটতে শুরু করেছে প্রান্তিক কৃষকেরা ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। আমনের এমন বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকদের, কারণ খরচের সঙ্গে উৎপাদনের হিসেব মিলছে না।
মন্তব্য করুন