শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরে পালিত হলো গারো সম্প্রদায়ের ‘ওয়ানগালা’ উৎসব

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎযাপন করেছেন ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব। ছবি : কালবেলা
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎযাপন করেছেন ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব। ছবি : কালবেলা

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গারো সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশেষ প্রার্থনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎযাপন করেছেন ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দিনব্যাপী উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর গির্জা চত্বরে এ উৎসবের আয়োজন করে।

গারোদের বিশ্বাস, ‘মিসি সালজং’ বা শস্যদেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন। নতুন ফল ও ফসল ঘরে উঠবে। তার আগে কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে শস্যদেবতার প্রতি। তাই শস্যদেবতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির জন্য নেচে গেয়ে উদযাপন করা হয় ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব। একই সঙ্গে পরিবারে ভালোবাসা, আনন্দ, সব পরিবারের মঙ্গল কামনা করা হয় শস্যদেবতার কাছে।

গারো সম্প্রদায়ের তথ্য মতে, গারোদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ওয়ানগালা। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মনোবাসনার নানা নিবেদন হয় এ উৎসবে। সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর আগে নতুন খাদ্যশস্য ভোজন নিষেধ থাকে এ সম্প্রদায়ের জন্য। তাই অনেকেই একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলে থাকেন।

সকাল ৯টায় মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর গির্জা চত্বরে থক্কা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর সহকারী পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার নিকোলাস বাড়ৈ। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার বিপুল ডেভিড দাস। বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবু তাহের, মরিয়মনগর প্যারিস কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওনারসন চাম্বুগং প্রমুখ।

উৎসবে ক্রুশচত্বরে বাণী পাঠ (মান্দিতে), খামালকে খুথুব ও থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্ক দেওয়া, পবিত্র খ্রিস্টযাগ, দান সংগ্রহ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রার্থনা করা হয়। গারো সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারোদের নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়।

মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার বিপুল ডেভিড দাস জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর উদ্যোগে ওয়ানগালা উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য। উৎসব ঘিরে ধর্মপল্লীর পাশে গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে বসে মেলা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী : ব্যারিস্টার অসীম

প্রত্যেক উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক : রুমিন ফারহানা

বিশ্বকাপ দলে ডাক পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হতে যাচ্ছে : প্রেস সচিব

ছুটির দিনেও জমজমাট চাকসুর নির্বাচনী প্রচার

কুমিল্লা নামেই বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তাল রাজপথ

হৃতিক রোশনের প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘স্টর্ম’

ধর্ম যার যার নিরাপত্তা সবার : আমীর খসরু

স্বাস্থ্যকর ঘুমের ১২ অভ্যাস

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল ইতালি সরকার

১০

পিআরসহ ৫ দফা মেনে নেওয়ার আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের

১১

অবতরণের সময় মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

১২

জানা গেল কবে দেশে ফিরবেন শহিদুল আলম

১৩

পচা চাল কিনে বাধ্যতামূলক অবসরে খাদ্য কর্মকর্তা

১৪

ভুল সময়ে ওজন মাপলে জানবেন ভুল তথ্য

১৫

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি সাইকেলিস্টদের

১৬

কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

১৭

ভোট নিয়ে জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি

১৮

ফুটবল খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

১৯

প্রাথমিকে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

২০
X