বাগেরহাটের ফকিরহাট ও তার আশপাশে কোরবানির হাটে প্রচুরসংখ্যক গবাদিপশু উঠেছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম পশুর হাট। বিক্রিও হচ্ছে বিভিন্ন আকারের গরু-ছাগল। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ খুশি নয়।
জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বেতাগা এবং পার্শ্ববর্তী লখপুর ও ফয়লা পশুর হাট ঘুরে দেখা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর পশুর দাম অনেক বেশি। বাজেটের মধ্যে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে বড় ও মাঝারি গরুর চেয়ে ছোট গরুর চাহিদা অনেক বেশি।
অন্যদিকে বিক্রেতাদের দাবি, গো-খাদ্য ও ওষুধের দাম বৃদ্ধির ফলে বছরজুড়ে তাদের যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তার চেয়ে কম টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে পশু। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
ব্যাপারীরা বলছেন, গত বছর কোরবানির গরু আনুমানিক ২৫ থেকে ২৮ হাজার টাকা মণ ধরে বিক্রি করা হয়েছিল। এবার তা ৩৩ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মণ ধরে দাম চাওয়া হচ্ছে। দরদামের মাধ্যমে দাম একটু কম বেশি হতে পারে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার মণপ্রতি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা বেশি দিয়েই কোরবানির গরু কিনতে হচ্ছে বলে একাধিক ক্রেতা জানান।
পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে, ভোর রাত থেকে ট্রাক, কাটা টেম্পো, নসিমন, করিমন ও ভটভটি বোঝাই করে গরু নিয়ে এসেছেন খামারি ও ব্যাপারীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতারা ভিড় করতে থাকেন। তবে গত বছরের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন গরুর ব্যাপারীরা। গরুর পাশাপাশি ছাগলের চাহিদাও রয়েছে হাটগুলোতে।
গরুর হাটের ইজারা গ্রহণকারী বেতাগা ট্রেডার্সের পরিচালক আনন্দ দাশ জানান, ব্যাপারীরা বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে কোরবানির পশু নিয়ে আসেন। বোতাগা ও লখপুর পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি ভলেন্টিয়ার টিম রয়েছে। জাল টাকা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে গবাদিপশু স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এ ছাড়া পশু বিক্রির টাকা নিয়ে গন্তব্যে যেতে কারও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে হাট ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট টিমকে জানানোর পরামর্শ প্রদান করেন।
ফকিরহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার ১০ হাজার কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে। ফকিরহাটে ছোট বড় এক হাজার খামারি প্রায় ১৩ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছে। এ ছাড়া হাটগুলোতে দূরবর্তী অঞ্চল থেকেও কোরবানির পশু আসে। পশুরহাটে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে গবাদিপশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
মন্তব্য করুন