বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে এক হাজার ৬৩৭ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ মানুষদেরও ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের কাছে প্রচুর টাকা ডিমান্ড (দাবি) করছে। টাকা দিতে না পারলে কারাগারে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর বাটার মোড়ে রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।
গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মিনু বলেন, সরকারের গুম-খুন-নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তাদের পরিবারের সদস্যদের আহাজারি তাদের (আওয়ামী লীগের) হৃদয়ে স্পর্শ করে না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে বিএনপি নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে মামলা দিচ্ছে। তবে এই জুলুম চালিয়ে এই সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। কারণ এই সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটানো হবে।
নির্বাচনী সেন্টারগুলোতে বিশেষ চার পায়ের জন্তু ছাড়া কোনো মানুষ অংশ নেবে না মন্তব্য করে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আজ যারা এই ডামি নির্বাচন করছে, সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ অংশগ্রহণ করবে না, করবে না, করবে না…। রাজশাহীতে আমরা অতীতের মতো প্রমাণ করে দেব ওই নির্বাচনী সেন্টারগুলোতে বিশেষ চার পায়ের জন্তু ছাড়া কোনো মানুষ অংশগ্রহণ করবে না, করবে না, করবে না…।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, হয় শহীদ না হয় কারাবরণ, এর জন্য সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রাসিকের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা প্রমুখ।
এদিকে, নগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার কথা থাকলেও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান দেখে স্থান পরিবর্তন করে বিএনপি। পরে বাটার মোড়ে অর্থাৎ জয়বাংলা চত্বরে মানববন্ধন করে তারা।
মানববন্ধন চলাকালে সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মানববন্ধন শেষ করে চলে যাওয়ার সময় সাদা পোশাকে পুলিশ বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করেছি। মানববন্ধন শেষ করে কিছুদূর যাওয়ার পর কোনো কারণ ছাড়াই সাদা পোশাকের পুলিশ বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন, নগর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম ডিকেন, রাজপাড়া থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি মিঠু ও যুবদল নেতা কচি। তবে অপর দুজনের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, আটককৃতরা নাশকতার মামলার আসামি। তারা আত্মগোপনে ছিলেন। মানববন্ধনে অংশ নিতে এসেছিলেন তারা।
মন্তব্য করুন