যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বাবুলকে ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) একই আসনের অপর দুই প্রার্থীর আপিলের শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন এ রায় দেয়।
এর আগে, গত ৩ নভেম্বর যশোর জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইকালে ওই প্রার্থীকে ঋণখেলাপি জানিয়ে বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ অপর দুই প্রার্থী আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে শুনানি শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করলে ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রনজিৎ কুমার রায় ও বিএনএম প্রার্থী সুকৃতি মন্ডল নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের আপিল করেন।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলার অভয়নগর, বাঘারপাড়া উপজেলা এবং সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত যশোর-৪ আসনে ভোট সংখ্যা তিন লাখ ৮৬ হাজার ৯৯১। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক বাবুল। তবে এনামুল হক বাবুল জনতা ব্যাংকের একজন ঋণখেলাপি বলে অভিযোগ করেছেন ওই আসনের অপর একটি দলীয় প্রার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এনামুল হক বাবুলের অভয়নগরের নওয়াপাড়া বাজারে মেসার্স রুম্মান ট্রেডার্স নামে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে জনতা ব্যাংক হতে ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছেন। এতে জনতা ব্যাংক বাদী হয়ে খেলাপি ঋণের ২১ কোটি ৪৪ হাজার ৮ টাকা আদায়ের জন্য ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর যশোর অর্থ ঋণ আদালতে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি যশোর যুগ্ম জেলা জজ (অর্থ ঋণ) আদালতে বিচারাধীন। ওই মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ৪ জানুয়ারি। সম্প্রতি সিবিআই রিপোর্টে ঋণখেলাপি হিসেবে প্রদর্শনের ওপর এবং বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ (৫ম আদালত) ঢাকা টাইটেল স্যুট আদেশের বিরুদ্ধে এনামুল হক বাবুল হাইকোর্টে সিভিল রুল দাখিল করেন। এতে হাইকোর্ট এক আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিবিআই রিপোর্টে ডিফল্ডার হিসেবে প্রদর্শনের ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন।
ওই প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, জনতা ব্যাংকের নওয়াপাড়া শাখার ঋণখেলাপির সাথে ওই আদেশের সংশ্লিষ্টতা নেই। কারণ, মহামান্য আদালত ব্যাংকের শাখার ওপর বা যশোর যুগ্ম জেলা জজের মামলা সংক্রান্ত কোনো স্থগিত আদেশ দেননি। এ ছাড়াও এনামুল হক বাবুল ঋণখেলাপি হওয়া শর্তেও প্রার্থী হিসেবে হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদান করেছেন। তিনি ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করেছেন। ব্যাংক সূত্রে নিশ্চিত হয়েছেন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনও ব্যাংকের ঋণ নিয়মিতকরণ/সমন্বয় করা হয়নি। ফলে তিনি ঋণখেলাপি রয়েছেন। যা নির্বাচনী আইনে তিনি অযোগ্য প্রার্থী।
এ ছাড়াও সর্বশেষ ১৬ নভেম্বর জনতা ব্যাংকের নওয়াপাড়া শাখা থেকে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতেও তিনি ওই শাখার একজন ঋণখেলাপি হিসেবে বলা হয়েছে। ওই চিঠিও আপিলে সংযুক্ত করা হয়।
মন্তব্য করুন