বগুড়ার শিবগঞ্জে অসুস্থ নাতনিকে দেখে ফেরার পথে জামাতার মারধর ও ছুরিকাঘাতে শ্বশুর বৃদ্ধ আব্দুস সাত্তার (৭০) নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সাত্তার উপজেলার সেকেন্দ্রাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি কৃষক। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর উপজেলার শব্দলদীঘি গ্রামে অসুস্থ নাতনি স্নিগ্ধাকে (৮) দেখতে যান সাত্তার। সেখান থেকে ফেরার পথে জামাতা মতিয়ার রহমান পারিবারিক কলহের জেরে তাকে মারধরের পর মাথায় ছুরিকাঘাত করেন। স্থানীয়রা টের পেয়ে সাত্তারকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শজিমেক ও হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনিত হলে তাকে হাসপাতালটির আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে সাত্তার মারা যান।
এই ঘটনায় গত ৮ ডিসেম্বর তার ছেলে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় মতিয়ারসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে।
নিহতের ছেলে ও মামলার বাদী মিজানুর রহমান বলেন, প্রায় ১৮ বছর আগে বড় বোন সান্ত্বনা খাতুনের সঙ্গে পাশের শব্দলদীঘি গ্রামের মতিয়ারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তিনি তুচ্ছ ঘটনায় সান্ত্বনাকে মারধর করে আসছিলেন। মতিয়ারের অভিযোগ তাকে জামাই হিসেবে ঠিকমতো দাওয়াত ও সমাদর করা হতো না। এ জন্য তিনি বোনকে আমাদের বাড়িতেও আসতে দিতেন না। প্রায় বছরখানেক আগেও মতিয়ার আমার বাবাকে মারধর করেছিলেন। বোনের সংসারের খাতিরে বিষয়টি আমরা মেনে নেই। গত ৬ ডিসেম্বর অসুস্থ ভাগ্নি স্নিগ্ধাকে দেখে আসার পথে মতিয়ার তার আত্মীয়দের নিয়ে বাবাকে মারধরের পর মাথায় ছুরিকাঘাত করেন।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, আমার বাবাকে কোনো দোষ ছাড়াই মতিয়ার খুন করেছেন। তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।
এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মতিয়ারের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক আছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন