বছরের শেষ সূর্যাস্ত ও প্রথম সূর্যোদয় উপভোগ করতে বরাবরই কুয়াকাটায় আগমন ঘটে হাজারো পর্যটকের। আর এ উপলক্ষে বাড়তি চাপ তৈরি হয় পর্যটন কেন্দ্র পটুয়াখালীর কুয়াকাটায়। তবে করোনার শুরুর থেকেই উন্মুক্ত স্থানে সরকারিভাবে অনুমোদন না থাকায় তেমন পর্যটকদের আনাগোনা চোখে পড়ে না।
তবে প্রতিবছরের ন্যায় এবছর হোটেল-মোটেল ও ব্যবসায়ীদের আগাম প্রস্তুতি থাকলেও তেমন আবাসিক হোটেলে বুকিং নেই বলে জানিয়েছেন হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ।
তিনি আরও জানান, এখন যে পরিমাণে পর্যটক দেখছেন তা মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় আশপাশের লোকজন। তারা সারাদিন সৈকতে ঘুরেফিরে সন্ধ্যায় আবার চলে যায়। তবে আগামী সপ্তাহে কিছু অগ্রিম বুকিং চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ, বিনোদন স্পটসহ বিভিন্ন স্থানকে রঙিন লাইট, বেলুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। হোটেল ধোয়া-মোছা করে পরিপাটি করে রেখেছেন, তবে কাঙ্ক্ষিত বুকিং না পেয়ে হতাশ বেশিরভাগ হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
ইংরেজি নববর্ষে সামনে-পেছনে কোনো সরকারি বন্ধ না থাকা এবং দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলোতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বুকিং হয়েছে তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতে কোনো প্রকার অগ্রিম বুকিং না থাকায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক থেকে বঞ্চিত হবার শঙ্কা পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের।
সরওয়ার জামান ও মিসেস জামান ঘুরতে আসছেন ঢাকার মিরপুর থেকে। তারা মূলত নবদম্পতি। তারা বছরের শেষ দিনটি কাটানোর জন্য কুয়াকাটায় বেড়াতে আসছেন। তারা ভাবছিলেন সৈকতে বসে ইংরেজি নববর্ষের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাবেন পাশাপাশি তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। তাদের দাবি তারা সূর্যকে বিদায় জানালেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত।
পর্যটক ফখরুজ্জামান বলেন, আমি লাউকাঠি থেকে আসছি। সকালে আসলাম আবার বিকেলে চলে যাব। রাতে অবস্থান করলেই ৩ হাজার টাকা নাই। তাই রাতেই চলে যাব। সারাদিন যা দেখছি তাতেই সন্তুষ্ট।
আবাসিক হোটেল গোল্ডেন ইন’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো৷ আল আমিন মুসল্লি বলেন, গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হরতাল-অবরোধের ধাক্কায় থার্টি ফার্স্টের মতো বড় বাজারেও আমরা লোকসান দিচ্ছি। আমরা রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি চাই।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানিয়েছেন, বছরে যতগুলো বন্ধে কুয়াকাটায় পর্যটকে টইটুম্বুর থাকে তারমধ্যে থার্টি ফার্স্ট নাইট অন্যতম। তাই এই বন্ধকে কেন্দ্র করে আমাদের অনেক আয়োজন থাকে, তবে আকাঙ্খার ২০ শতাংশও বুকিং হচ্ছে না। যে কারনে হোটেল মালিক ও পর্যটকদের সেবা দেয়া ২৬টি পেশার মানুষ এখন হিমশিম খাচ্ছে। যা পর্যটকদের জন্য হুমকি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ডিসেম্বরজুড়ে পর্যটকদের চাপ থাকে। তবে বর্তমানে কিছুটা কম তারপরেও সার্বিকভাবে আমরা তৎপর রয়েছি। যাতে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
মন্তব্য করুন