নাটোরে গুরুদাসপুরে এ বছর বেড়েছে সাদা সোনা খ্যাত রসুনের আবাদ। আমন ধান কাটা কাদাযুক্ত নরম জমিতে রসুনের কোয়া বুনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বিনা চাষে আর অল্প খরচে এ ফসলের সঙ্গে সাথি সফল তরমুজ, বাঙ্গি ও মিষ্টি কুমড়া আবাদ করা যায়। ফলে রসুনে লাভ না হলেও সাথি ফসলে লাভের আশায় প্রতি বছরই এ আবাদে আগ্রহ থাকে কৃষকদের।
তথ্যমতে, সারা দেশের এক তৃতীয়াংশ রসুন নাটোর জেলাতেই হয়ে থাকে। গত বছর জেলাতে ১৬ হাজার ৭০৪ হেক্টর জমিতে এ ফসলের আবাদ হয়েছিল। এ বছর বেড়ে ১৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে এআবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে। এদিকে জেলার এক তৃতীয়াংশ রসুন গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলাতেই হয়ে থাকে। এর মধ্যে বড়াইগ্রাম উপজেলাতে ৭ হাজার হেক্টর আর গুরুদাসপুর উপজেলাতে ৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে এ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠগুলোতে চলছে রসুন আবাদের মহোৎসব। রসুনের কোয়া বুনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার কৃষকরা। গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়ন ও খুবজিপুর ইউনিয়নের মাঠগুলোর দিকে তাকালেই দেখা মিলে জমি প্রস্তুতকরণ ও রসুনের কোয়া বোনার দৃশ্য। দেখা মিলবে ঢেকে রাখা জমির খড়ের ফাঁক বের হওয়া রসুনের কচি পাতা। খুবজিপুর ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এক বিঘাতে জমিতে আবাদে খরচ হয় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। রসুন উৎপাদন হয় ২৫ থেকে ২৭ মণ। এর সাথে সাথী ফসল তরমুজ, বাঙ্গি ও মিষ্টি কুমড়া আবাদ হয়। ফলে রসুন আবাদের লাভ না হলেও সাথী সফল দিয়ে কাটিয়ে ওঠা যায় ক্ষতি।
ধারাবারিষা ইউনিয়নের কৃষক আমজাদ ও রফিক বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে রসুন আবাদ করছেন। রসুন ও সাথি ফসল বিক্রিতে সফলতা পায়নি। গুনতে হয়েছে লোকসান। ফলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। এবছর রসুনের ভালো দাম পাওয়ায় সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন। তাই এ বছর আরও দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে বুনেছেন রসুন। শ্রমিকরা বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু আমাদের শ্রমের দাম বাড়েনি। আগে শ্রমের দাম ছিল ৪০০ টাকা। এখন কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার হারুনর রশিদ বলেন, এ বছর শুরু থেকেই রসুনের বাজারমূল্য চড়া ছিল। ফলে কৃষকরা রসুনের ভালো দাম পেয়েছেন। তাই রসুনের আবাদ বেড়েছে। কৃষি পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন