নাঈম ইসলাম, তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:১৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গোলের রসের মিষ্টি গুড়ে বরগুনার বেহালা গ্রামের চাষিদের ভাগ্যবদল

গোল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন এক চাষি। ছবি : কালবেলা
গোল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন এক চাষি। ছবি : কালবেলা

গোল গাছের রস সংগ্রহ করে বড় একটি পাত্রে রেখে দীর্ঘ সময় আগুনে উনুন দিয়ে তৈরি করেন মিষ্টি গুড়। এই গুড় এতটাই জনপ্রিয় হয়ে গেছে যে ভারতের কলকাতাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। ডায়াবেটিসের রোগীরাও এই গুড় খেতে পারবেন। প্রতিদিন রস থেকে মিষ্টি গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন প্রান্তিক গ্রামের গোল চাষি অমৃত হাওলাদার। এ কাজে তার মা ও স্ত্রী সাহায্য করেন।

শীতের মৌসুমের কয়েক মাস গোল গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। বরগুনার তালতলী উপজেলার করইবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেহেলা গ্রামের গোল চাষি অমৃত হাওলাদারের ৮ সদস্যের পরিবার। জীবিকার তাগিদে গোল গাছের রস দিয়ে গুড় তৈরি করে বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত করেন। নিজের কোনো জমি জমা না থাকায় অন্যের গোল গাছ চুক্তিটি নিয়ে প্রতি বছর শীত মৌসুমে এ কাজ করেন তিনি।

অমৃত হাওলাদারের মতো ওই এলাকায় ১৫০ জনের বেশি গোল চাষিদের সংসার চলছে রস ও গুড় বিক্রি করে। এতে বেহেলা গ্রামে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকার বেশি গুড় বিক্রি হচ্ছে।

তালতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে গোল গাছের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সবচেয়ে বেশি গুড় আসে বেহালা গ্রাম থেকে। এক মৌসুমে প্রায় ১২ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়।

গোল চাষি অমৃত হালদার বলেন, প্রথমে রসটি সংগ্রহ করে আগুনে জাল দিয়ে গুড় তৈরি করি এ সময় যদি কোনো ময়লা থাকে তা ছাকনির মাধ্যমে পরিষ্কার করে নির্ভেজাল মিষ্টি গুড় তৈরি করি। পরে এটি বাজারজাত করি। এবছর ১২০ টি গোল গাছ রেখেছি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে। প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এই রস বা গুর বিক্রি করেই আমার সংসার চলে।

গোল চাষিদের সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতার দাবি করেন তিনি। স্থানীয়রা চাষি কৃষ্ণকান্ত মিস্ত্রি বলেন, এই গোলের গুড় বিক্রি করে এ গ্রামে বছরে কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়। গোলের রস থেকে মিষ্টি গুড় তৈরি হয় শুধু এই বেহালা গ্রামে। আমাদের আত্মীয়স্বজন তারা ভারতে খেতে নিয়েছেন সেখানেও খুব ভালো সুনাম কুরিয়েছে।

বনানী অধিকারী নামের আরেকজন বলেন, এখানকার চাষিদের সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা করলে তারা আরও বেশি স্বাবলম্বী হতে পারবে। এখানকার অনেক চাষিরা গাছের সঠিক পরিচর্যা করতে পারে না। সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পেলে আরও বেশি স্বাবলম্বী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন হাওলাদার বলেন, উপজেলার বেহলার গ্রামের গোল চাষের ইতিহাস শতবর্ষ যাবৎ চলতেছে। এখানকার গোলের গুড় খুব সুস্বাদু। স্থানীয় গোল চাষিরা এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এই গুড়ে কোনো ধরনের ভেজাল নেই। আমরা আশা করতেছি সরকারি বা বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে এই শিল্প কি বাঁচিয়ে রাখতে হবে তা না হলে এই শিল্প হারিয়ে যাবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

ঘুম থেকে উঠেই বিছানা পরিষ্কার করা ভালো নাকি খারাপ, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

নৌ-পুলিশের অচল স্পিডবোটের জন্য বরাদ্দ ২০০ লিটার তেল!

‘আমি নাকি গে!’ গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন অক্ষয় কুমার

আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল শুরু

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পরীক্ষায় জালিয়াতি, প্রতারক গ্রেপ্তার 

মুন্সীগঞ্জে একদিনেই মিলল তিন মরদেহ

ছাত্র মজলিসের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রহমত আলী আটক

বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

অপহরণ মামলায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে আশুলিয়ার এসআই ক্লোজড

১০

ইন্দোনেশিয়ার উত্তাল পরিস্থিতিতেই সব আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হেলিকপ্টার

১১

মেয়াদ উত্তীর্ণ সার্জিক্যাল পণ্য রাখায় তিন ফার্মেসিকে জরিমানা

১২

১০ বিচারকের বদলির আদেশ

১৩

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর মতো কোনো শক্তি নাই : দুদু

১৪

জাতীয় পার্টির প্রেস সেক্রেটারির পদত্যাগ

১৫

সাভারে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুস্থ-অসুস্থদের আর্থিক সহায়তা

১৬

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা রিমান্ডে 

১৭

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে খেপিয়ে তুলতে আ.লীগের কৌশল, দায়িত্বে পুতুল

১৮

নাসুমের স্পিন ঘূর্ণিতে ১০৩ রানে অলআউট নেদারল্যান্ডস

১৯

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন জবি শিক্ষার্থীরা

২০
X