দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলোচিত ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা, ধামসোনা ইউপি সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম।
এদিকে এই আসনে নৌকার হেভিওয়েট প্রার্থীর হার নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে নানা চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমন্বয়হীনতা ও আঞ্চলিকতার প্রভাবে হেরেছেন দুইবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. এনামুর রহমান।
শ্রমিক নেতা আল কামরান বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় যে শ্রমিকদের ওপর ভর করে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন ডা. এনামুর রহমান, এমপি নির্বাচিত হবার পর সেই শ্রমিকদের সঙ্গেই তিনি আর কোনো সম্পর্ক রাখেননি। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার পরেও করোনাকালীন সময়ে তিনি শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াননি। এছাড়া আশুলিয়ার জামগড়াসহ অনেক অঞ্চলে তিনি কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করেননি।
নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী এনাম ভাইয়ের মাধ্যমে সাভার আশুলিয়ায় যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, সেগুলো ভোটারদের কাছে শতভাগ তুলে ধরতে পারিনি। পাশাপাশি এই অঞ্চলে বিএনপি ও জামায়াতের একটি ভোটব্যাংক রয়েছে, তারাও অনেকে নৌকার বাইরে ভোট দিয়েছে সে কারণেই মূলত নৌকার এই পরাজয়।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন বলেন, নৌকার হারের কারণ সম্পর্কে এই মুহূর্তে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। বিষয়টি নিয়ে আমরা সাংগঠনিকভাবে বসে বিশ্লেষণ করে তারপর মন্তব্য করব। তবে আমি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যকে অভিনন্দন জানাই। আমার প্রত্যাশা থাকবে তিনি একটি সুন্দর সাভার আমাদের উপহার দেবেন।
সাভার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, আমাদের আসনে ভোটের মাঠে আঞ্চলিকতার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিল । এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও আওয়ামী লীগের হওয়ায়, এখানে নৌকার ভোট ভাগ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের রেখে ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের দিয়ে তিনি নির্বাচন পরিচালনা করায় নৌকার এই পরাজয় বলে আমি প্রাথমিকভাবে মনে করছি।
নৌকার ভরাডুবির বিষয়ে ডা. এনামুর রহমানকে মুঠোফোনে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মন্তব্য করুন