শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শীতে জনজীবন জবুথবু, সুযোগে পোয়াবারো ব্যবসায়ী

শীতের পোশাক পছন্দের চেষ্টায় এক ক্রেতা। ছবি : কালবেলা
শীতের পোশাক পছন্দের চেষ্টায় এক ক্রেতা। ছবি : কালবেলা

সারা দেশের মতো শরীয়তপুরে হঠাৎ বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। এতে শ্রমজীবী, বৃদ্ধ ও শিশুরা জবুথবু। এ যখন জনজীবনের অবস্থা তখন খুশি কাপড় ব্যবসায়ীরা। মাসের শুরুতে শীতের পোশাক কেনা-বেচার ব্যবসা মন্দা গেলেও কয়েক দিন ধরে সরগরম বাজার। স্থানীয় দোকান, বাজার, ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণিবিতানগুলোতে শীতের কাপড়ের বেচাকেনার ধুম পড়েছে।

অনেকেই পরিবারের জন্য, আবার কেউ কেউ ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করতে এখন গরম কাপড় কিনছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেসরকারি দাতা সংস্থা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো কম্বলসহ গরম কাপড়ের ক্রয়াদেশ দিচ্ছে।

শরীয়তপুরের পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে বেচাকেনা ছিল না। তাই ব্যবসা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তারা। তবে শীত জেঁকে বসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। শীতের শুরুতে ত্রাণের কম্বলেরও চাহিদা কম থাকলেও এখন অনেক বেড়েছ।

এদিকে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কমে এলেও শীতের তীব্রতা লক্ষ্য করা যায়।

শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে শীতের পোশাক বিক্রি। ক্রেতার চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী বিভিন্ন দামে মিলছে শীতের নানা পোশাক। আবার কেউ ভ্যান গাড়িতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন শীতের পোশক।

ফুটপাতের বিক্রেতারা বলেন, কম দামে শীতের পোশাক কিনতে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তরাই তাদের দোকানগুলোতে বেশি আসে। তাদের দোকানে সোয়েটার, জ্যাকেট, ফুলহাতা গেঞ্জি ও ব্লেজার বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে বিক্রির শীর্ষে রয়েছে চাদর, মাফলার, কানটুপিসহ নানা ধরনের শীতবস্ত্র। ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চলছে এসব পণ্যের বেচাকেনা।

ভ্যান দিয়ে ঘুরে ঘুরে পোশাক বিক্রি করা টিটু কালবেলাকে বলেন, মার্কেটের তুলনায় ভ্যানে বা অস্থায়ী দোকানে পোশাকের দাম কম হওয়াতে আমাদের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকদের জন্য বিক্রি করা হাতের মোজা, পায়ের মোজা, শিশুদের হাতের-পায়ের মোজা, শিশুদের ছোট গরম জামাকাপড় এবং বৃদ্ধদের মাথার টুপি এসব আমি বিক্রি করে থাকি। শীতের শুরুতে কেনা-বেচা একটু কম থাকলেও, বর্তমানে শীত বৃদ্ধি পাওয়ায় কেনা-বেচা বেড়েছে বহু গুণ।

অস্থায়ী দোকানে শীতের জ্যাকেট বিক্রি করেন মো. জসিম। তিনি কালবেলাকে বলেন, কয়েক দিন ধরে শীত বাড়ায় বেচাকেনাও বেড়েছে। এ রকম বেচা-কেনা থাকলে ব্যবসাটা চাঙা হবে ইনশাআল্লাহ। তার দোকানে বিক্রি হচ্ছে ছোট-বড় সব ধরনের জ্যাকেট।

ফুটপাতে গরম কাপড় ব্যবসায়ী জামাল ফকির কালবেলাকে বলেন, কম দামে জিনিস কিনতে মানুষ ফুটপাতে আসে। তবে আমি ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে এক দেড় হাজার টাকার মালও বিক্রি করি।

জামাল ফকিরের মতোই একটি অস্থায়ী দোকানে সোয়েটার ও কানটুপি বিক্রি করেন হাসান আলী। কম দামে সোয়েটার কিনতে নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে সবাই ভিড় করে তার দোকানে। তবে সোয়েটারের চেয়ে কানটুপি ও মাফলার বেশি বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

তবে আগের তুলনায় শীতের পোশাকের দাম এবার তুলনামূলক বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ, সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। শরীয়তপুর দুবাই প্লাজায় ছোট বাচ্চাদের ফুলহাতা গেঞ্জি দরদাম করছিলেন সাইদ রহমান। তার অভিযোগ, ‘বাচ্চা পোলাপানের গেঞ্জি ৭০০ টাকা চাইতাছে। সামান্য বেতনে চাকরি করি, ঢাকার মার্কেটে যাওয়ার সাধ্য নাই। তাই শরীয়তপুরের এ মার্কেটে এসেছি। এখন এখানেও দেখি বড় মার্কেটের সমান দাম চাইতেছে।’

হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়া আবুল কাশেম নামের এক দিনমজুর এসেছেন কম্বল কিনতে। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘সরকারিভাবে একটা পাতলা কম্বল পাছি। সেই কম্বলে কি আর শীত মানে? তাই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে টাহা দার করে একটা কম্বল কিনতে আইছি। অহন কম্বলের দাম দেহিয়া না কিনিয়াই যাইতাছিগা।’

শীতের পোশাকের পাশাপাশি বেড়েছে কম্বল, লেপ, চাদরসহ অন্য পণ্যের বিক্রি। সদর উপজেলার কম্বল বিক্রেতা কামরুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, এক সপ্তাহ আগে থেকেই কম্বল বিক্রি বেড়েছে। ৪০০ থেকে শুরু করে তিন হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এসব কম্বল।

আরেক ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন বলেন, ১৫ দিন ধরে চলছে এসব পণ্যের বেচাকেনা। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে। অনেক লোক কম্বলই কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেঘনার তীরে দেখা মিলল রাসেল ভাইপারের, অতঃপর...

স্বামীর ছুরিকাঘাতে গার্মেন্টস কর্মী স্ত্রী নিহত

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে সাভারে ব্যাপক গণসংযোগ

খেলাধুলা চর্চার মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে মাদকমুক্ত জাতি : আমিনুল হক

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না : সাইফুল হক

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, বহু হতাহত

বৃষ্টি আর কতদিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

ইলিয়াস কাঞ্চনের মৃত্যুর গুজব, যা বললেন ছেলে জয়

শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়াকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

দলে দলে ঘরে ফিরছে হাজারো গাজাবাসী

১০

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

১১

রাজধানী থেকে বগুড়া শহর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

১২

হেফাজতে ইসলাম সবার জন্য পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছে :  এ্যানি

১৩

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৪

রাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ

১৫

ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার উৎসর্গ করলেন মারিয়া

১৬

দেশের ৪০ শতাংশ নারী থাইরয়েডে আক্রান্ত!

১৭

‘এই পচা চালের ভাত কীভাবে খাব’

১৮

‘পুলিশ এখন বানরের মতো’ বললেন ওসি হাবিবুল্লাহ

১৯

ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে নামতে পারে আর্জেন্টিনা

২০
X