কেএম রাশেদ কামাল, মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এক ইউনিয়নেই ২৩ ইটভাটা, ৩ ফসলি জমি এখন পরিত্যক্ত

পাঁচখোলা ইউনিয়নে একটি ইটভাটা। ছবি : কালবেলা
পাঁচখোলা ইউনিয়নে একটি ইটভাটা। ছবি : কালবেলা

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর পাঁচখোলা গ্রাম। এ গ্রামের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুই চোখ মেলে তাকালে শুধু সবুজের মেলা মিলত। দুই-তিন ফসলি জমিতে সারা বছর শাকসবজি ফলত। ইটভাটার আগ্রাসনে সেসব ফসলি জমি এখন পরিত্যক্ত। এক হিসেবে দেখা গেছে, এ ইউনিয়নেই ২৩টি ইটভাটা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর পাঁচখোলা গ্রামের ফসলি জমি থেকে ইটভাটায় মাটি নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে গভীর গর্ত করে উর্বর মাটি তুলে ফেলা হয়েছে। আবার কোথাও সারি সারি ইট সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাশেই চিমনি দিয়ে বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। এতে করে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। এমন চিত্র মাদারীপুরের এ গ্রামজুড়ে।

ইউনিয়নটিতে গড়ে তোলা হয়েছে ২৩টি ইটভাটা। এদের অধিকাংশ ইটভাটার ইট পোড়ানোরও অনুমতি রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্মাদের যোগসাজশেই চলছে এই কাজ। এতে করে স্বাস্থ্যগত মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পাঁচখোলা গ্রামের বাসিন্দা মোকলেসুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আগে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হতো। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি এখন ইটভাটার দখলে। এরা জমি এমনভাবে গর্ত করে যাতে করে পাশের জমি ভেঙে পড়ে। এভাবেই জমিগুলো দখল করছে। ইটভাটার কারণে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ। আমরা এর প্রতিকার চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, ‘কৃষি ও কৃষিজমি নষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ইটভাটা। এ ছাড়া ভাটার দূষণ ও বিরূপ প্রভাবে আশপাশের জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। ফসলি জমি নষ্ট হয় এমন স্থানে ইটভাটার লাইসেন্স দেওয়া উচিত নয়। অথচ ফসলি জমিতেই গড়ে উঠেছে ইটভাটা।’

মাদারীপুর জজ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেল বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে আবাসিক এলাকা ও কৃষি জমিতে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তা-ই নয়, ওই আইনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সীমারেখার (ফসলি জমি) এক কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো ইটভাটা করা যাবে না।

মাদারীপুর ইটভাটা শিল্প মালিক সমিতির দায়িত্বশীল নেতারা এই বিষয় কথা বলতে রাজি হননি। এমনকি অভিযুক্ত ইটভাটা মালিকরাও কথা বলতে চাননি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, ‘কোনো কৃষি জমি নষ্ট করে ইটভাটা করা যাবে না। আইনগতভাবে এটা নিষিদ্ধ। অবৈধ ইটভাটা থাকলে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সোমবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

জেনে নিন আজকের নামাজের সময়সূচি

এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

ক্যাশমেমো নেই, খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দাম কাঁচামালে

রামপুরায় ভবনের ৬ তলা থেকে পড়ে রডমিস্ত্রির মৃত্যু

কুড়িয়ে পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভ্যানচালক

বুড়িগঙ্গা থেকে লাশ উদ্ধার / ৪ জনকেই হত্যা করা হয়েছে, ধারণা পুলিশের

ওসির বদলির খবরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে মিষ্টি বিতরণ স্থানীয়দের

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

১০

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

১১

সড়কের মাঝখানে গাছ রেখেই ঢালাই সম্পন্ন 

১২

বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

১৩

টানা ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জবির ভিসি

১৪

৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের নতুন বার্তা দিল এনসিপি

১৫

ম্যানইউর জয়হীন ধারা অব্যাহত, এবার ফুলহামের মাঠে ড্র

১৬

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা-পেশাজীবীদের নিয়ে ‘আগামীর পথ’ অনুষ্ঠিত

১৭

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

১৮

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

১৯

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

২০
X