উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঢাল হিসেবে কাজ করে বন হরিনঘাটা। সেই বন নির্বিচারে ধ্বংস করছে ভূমি ও বনদস্যুরা। একের পর এক বনের গাছ কেটে গড়ে তোলা হয়েছে ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের। একের পর এক সংবাদ প্রকাশের পরও বন্ধ হচ্ছে না এই বন উজাড়।
বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পদ্মা এলাকার হরিঘাটা বনের গাছ কেটে নতুন করে অন্তত ১৫টি পরিবার জায়গা দখল করে গড়ে তুলছে ঘরবাড়ি মাছেরঘেরসহ কৃষি জমি। এতে বনাঞ্চল উজার হয়ে ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। বন বিভাগের জায়গায় অবাধে ঘরবাড়ি নির্মাণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিও বনদস্যুদের সঙ্গে বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
এর আগে ২০১৩ সালে বনের ওই অংশের গাছ কেটে ৩৫টি পরিবার অন্তত ৯ একর জমি দখলে নিয়ে সেখানে ঘর-বাড়ি তুলে বসবাস শুরু করে। আর সেই সংখ্যাটি বেড়ে এখন প্রায় শতাধিক হয়েছে। ওই সময় বন বিভাগের পক্ষ থেকে দখলদারদের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দেওয়া হলেও তাদের বিরুদ্ধে আজও উচ্ছেদের বিষয়ে কোনো কার্যকারী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরিবারগুলো এখন তাদের জমির আয়তন বাড়াতে বনের গাছ কেটে পুনরায় দখল প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আর বন বিভাগ বলছে, জনবলের অভাবে সব সময় খোঁজখবর রাখা যায় না। দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তারা বনকর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করে মিথ্যা মামলা দেন।
গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, দেখছি বনের গাছ কেটে জমির আয়তন বাড়াচ্ছে। আমরা অনেকেই বন বিভাগকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। তারা বলেছে, আমরা দেখতেছি। বাস্তবে তারা কিছুই দেখে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আলম জানান, বন আমাদেরকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। সেই বনের গাছ কেটে জমি দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করছে।
পাথরঘাটার হরিণঘাটা বিট কর্মকর্তা আব্দুল হাই অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। তারা নিজেরা বাঁচার জন্য এবং আমাদের ফাঁসানোর জন্য এই কথাগুলো বলছে। এখানে দখলদাররা যত বড় ক্ষমতার অধিকারী হোক না কেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, নতুন করে বন বিভাগের যে জমি দখল করা হয়েছিল বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দখলকৃত জমি উদ্ধার করেছি এবং বন উজাড় করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে বন মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরসঙ্গে বন বিভাগের কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন