সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০২ এএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:২৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

এস্কেভেটর দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। ছবি : কালবেলা
এস্কেভেটর দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। ছবি : কালবেলা

রাতের আঁধারে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার উৎসব। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি মহল। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের ছলেনামা গ্রামের আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে চলছে এ মাটি কাটার উৎসব।

সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মার পাড় থেকে রাতের আঁধারে এস্কেভেটর দিয়ে ৪০-৫০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। ভাটা মালিকরা কৃষকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে নদীপাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়বে ছলেনামা গ্রামসহ শত শত একর ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা।

কৃষিবিদদের মতে, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি (টপ সয়েল) গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মূলত মাটির এই স্তরে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটির এই স্তর কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরশক্তি নষ্ট হয়। এ জন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তা ছাড়া কৃষিজমির ওপরের এ টপ সয়েল হারিয়ে ফেললে তা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১০-১২ বছর লাগে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে উপস্থিত একাধিক কৃষক জানান, অবৈধভাবে মাটি ও বালু কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। পদ্মার পাড় থেকে রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত মাটি কাটে তারা। রতভর চলে তাদের কর্মযজ্ঞ। এভাবে চলতে থাকলে বর্ষায় আমাদের ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কৃষক জানান, রাত ১১টায় তাদের মাটি কাটা শুরু হয় এবং ভোরে এস্কেভেটর ও ট্রাক নিয়ে চলে যায়। উপজেলা প্রশাসন মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মাটি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে সদরপুরের পদ্মা পাড়ের বিভিন্ন এলাকা নদীভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারিয়েছেন কয়েকশ পরিবার। আর এখন শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা পাড়ের মানুষের নতুন আতঙ্ক মাটি ব্যবসায়ীরা। পদ্মার ভাঙন ও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ), ২০১৩ অনুযায়ী, কৃষিজমির মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করা নিষিদ্ধ। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ আইন প্রয়োগ করবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, আমরা নিয়মিত মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। পদ্মার পাড় থেকে রাতের আঁধারে মাটি কাটার ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। পদ্মার চর দুর্গম এলাকা হওয়ায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অভিযানের পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুব সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে খেলার কোনো বিকল্প নেই : মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু

অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার সাবেক মেয়র

মোটরসাইকেল চোরচক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের জেলা সহসভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

আওয়ামী লীগের ৮ নেতার পদত্যাগ

দগ্ধ বেলালকে দেখতে লক্ষ্মীপুরে তারেক রহমানের উপহার নিয়ে রিজভী

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মারলেও সরকারের অবস্থান দেখা যায়নি : ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি

সৌদিতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

আহমদ ছফার নামে সড়কের নামকরণ

১০

সীমান্তে সাড়ে ২১ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ

১১

সড়কের এক কিমি যেন মরণফাঁদ, ছয় মাসে প্রাণহানি ১১

১২

‘কোটি মানুষের বুক ভেদ করে তারেক রহমানের ক্ষতি করার শক্তি কারও নেই’

১৩

শ্রীলঙ্কায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি বার্তা

১৪

এক রাতে দুই পরিবারের ১০ গরু চুরি

১৫

শরিফ ওসমান হাদির কবরের পাশে চরমোনাই পীর

১৬

স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন / কেবল ডিগ্রি নয়, সক্ষমতা ও শৃঙ্খলাও জরুরি : আসিফ নজরুল

১৭

হিন্দুদের পাশে থাকবে বিএনপি : প্রিন্স

১৮

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

১৯

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থি ৬ ডিনের পদত্যাগ

২০
X