নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কলাবাগ রাস্তাটি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে ৪ গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দা। রাস্তাটি দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কটি দিয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ পথ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে এ এলাকায় বসবাসরত হাজারো মানুষের মনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, বন্দর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কলাবাগ রাস্তাটি প্রধান সড়কের পাশে ত্রীবেণী খালঘেঁষে গড়ে উঠেছে। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এ রাস্তায় কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে রাস্তাটিতে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে জলাশয় তৈরি হয়ে যায়। বর্তমানে সড়কটিতে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ এলাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এ পথ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে নানা দুর্ঘটনায় সম্মুখিন হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী, অসুস্থ ও বয়স্ক লোকজনের যাতায়াত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কখনো কখনো মানুষ অসুস্থ হলে এ পথ দিয়ে যেতে বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এমনকি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, পথচারীরা এ পথ দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আমরা এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার অবগত করেও কোনো সাড়া পাইনি। নুরজাহান নামের এক গার্মেন্টস কর্মী বলেন, বন্দর উপজেলার মধ্যে বন্দর ইউনিয়নটি সবচেয়ে অবহেলিত। বন্দর দক্ষিণ কলাবাগ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে নাজুক অবস্থা। এ রাস্তাটি দিয়ে দিনের বেলায় চলতেই কষ্ট হয়। যখন রাতের ডিউটি হয় তখন এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায় সময় গর্তে পড়ে গিয়ে আহত হই। নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা এ এলাকায় এসে প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে খবরও নেয় না। ভোটের সময় তাদের দেখা মিলে, পরে তাদের খুঁজেও পাওয়া যায় না। আমরা চাই রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।
মিজানুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী জানান, এ রাস্তাটি খালের পাড় দিয়ে তৈরি হওয়ায় বৃষ্টির দিনে চলতে গিয়ে প্রায় সময় পা পিছলে খালে পড়ে যাই। তাছাড়া মালামাল বহন করতে কোনো পরিবহন চলতে পারে না। বন্দরের বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন হলেও এ এলাকার মনে হয় অভিভাবক নেই। বন্দর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ইমন আহমেদ বলেন, গত বছর এ রাস্তাটি সংস্কারের কাজ করার কথা ছিল। ভেকু দিয়ে মাটিও ফেলা হয়েছিল। পরে মাটি সরে খালে পতিত হয়েছে। এরপর থেকেই অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে গেছে কাজ। বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বন্দর ইউনিয়ন দক্ষিণ কলাবাগ রাস্তাটির সংস্কারকাজ নিয়ে আমি খুবই বিব্রত। এই রাস্তাটির ঠিকাদার বিএনপি নেতা তানভীর নামে এক ব্যক্তির লাইসেন্সে ৩ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। সে আত্মগোপনে থাকায় রাস্তাটির সংস্কারকাজ ঝুলে আছে। তবে আমি তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তাকে না পাওয়া গেলেও খুব দ্রুত আমি নিজেই উদ্যোগে নিয়ে দক্ষিণ কলাবাগ রাস্তাটির সংস্কার করব। জনগণের কাছে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। যে কোনো মূল্যে জনগণের কষ্ট লাঘব করা আমার দায়িত্বের মধ্যেই বর্তায়।
বন্দর উপজেলার প্রকৌশলী মীর কায়সার রিজভী জানান, এ রাস্তাটির সংস্কারকাজ দীর্ঘদিন না হওয়ায় পূর্বের ওয়ার্ক অর্ডার বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।
মন্তব্য করুন