প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার কৃষি জমি রক্ষার তাগিদ দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা আমলে না নিয়ে দিচ্ছে মাটি কাটার অনুমতি। ফলে দিন দিন বালিয়াকান্দি উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় কমছে কৃষি জমির পরিমাণ, নষ্ট হচ্ছে সড়ক।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় দিনে রাতে ভেকু দিয়ে গভীর গর্ত করে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এতে হারিয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা কৃষি জমি, পরিণত হচ্ছে জলাশয়ে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে মানচিত্র থেকে উধাও করে দিচ্ছে কৃষি জমি। যদিও কৃষি জমি রক্ষায় সরকারের কড়া নির্দেশ রয়েছে। এরপরও সেগুলো রক্ষা হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।
সংশ্লিষ্টরা ভেকু দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ২০ থেকে ৫০ ফুট গভীর গর্ত করে কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে ফসলি জমি চিরতরে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে। সেগুলো হয়ে যাচ্ছে জলাশয়। এভাবে গভীর গর্ত করায় পাশের কৃষি জমিও ভেঙে পড়ছে। ফলে কিছু কিছু জমির মালিক বেশি টাকার লোভে মাটি বিক্রি করলেও অনেকেই বাধ্য হয়ে বিক্রি করছেন।
গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়ায় বেশ কিছু এলাকায় শত শত একর কৃষি জমি জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে এসব মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। গভীর গর্ত করে মাটি কাটায় পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। যা জলবায়ুর ওপর প্রভাব পড়বে। এভাবে কৃষি জমি নষ্ট করায় ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
এদিকে উপজেলার বহরপুর আবাসনের ফসলের মাঠের মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয় জেনেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদেরও কোনো মাথাব্যথা নেই। পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে কৃষি জমি থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে নিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করছে অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা।
বহরপুর আবাসনের পাশে কৃষি জমি থেকে মাটি খননে হতাশা জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, এর পাশে আমার ভুট্টা ক্ষেত। গতকাল বাড়ি এসে দেখি সেখানে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার পাঁয়তারা চলছে। আমি বাধা দিলে মাটি কাটা বন্ধ করে। কিন্তু ওরা তো প্রভাবশালী। আজ বন্ধ করছি, কালকে হয়তো বাধ্য হয়েই কাটতে দিতে হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মন্তব্য করুন