ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাটে গত কয়েকমাস ধরে পল্লী বিদ্যুতের ক্রমাগত লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত এলাকার জনগণ। প্রতিদিন দেড় থেকে ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পান না উপজেলার প্রায় ৬২ হাজার গ্রাহক। এবার তারা ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পল্লী বিদ্যুতের হালুয়াঘাট জোনাল অফিসের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন স্থানীয় শতাধিক কৃষক ও পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক। মানববন্ধন শেষে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তারা।
এদিকে বিদ্যুৎ অফিসের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রেজাউল করিম, আবুল কাশেম, আবু রাশেদ, শাহজালাল, সিরাজ উদ্দিন, ফজলুল হক, আব্দুল করিম, তানভীর আহমদ প্রমুখ। পরে পল্লী বিদ্যুতের হালুয়াঘাট জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নুরুল হুদা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে হালুয়াঘাটে বোরো আবাদ ক্ষেত্রে পানির প্রয়োজন। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে দিন ও রাতে মিলিয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। যাও ১ থেকে ২ ঘণ্টা থাকে এতে সেচের পানি তোলার মতো ভোল্টেজ থাকে না। আমরা কৃষকরা বোরো ক্ষেতে পানি দিতে পারছি না। এতে করে ফসল ও জমি নষ্ট হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, বিদ্যুৎ অফিসে এসব অভিযোগ নিয়ে গেলে দায়িত্বে থাকা ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নুরুল হুদা গ্রাহকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক না করা হয় তাহলে আমরা জোনাল অফিসের সামনে আমরণ অনশনে বসবো।
পরে সকালে অফিস করলেও মানববন্ধন শুরু হওয়ার পরেই অফিসে তালা দিয়ে চলে যান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার।
হালুয়াঘাট জোনাল অফিসের এজিএম মো. ইমরান হোসেন বলেন, এখন কৃষি কাজের সময় ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের দরকার। আছে ৫ মেগাওয়াট। তাই আমরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ দিতে পারি না। তবে আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যে একটা সমাধান হবে।
খারাপ আচরণের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করি না। অফিসের সামনে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। অন্য কেউ যদি করে থাকে সেটা তো আমি বলতে পারব না।
হালুয়াঘাট কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুল রহমান বলেন, উপজেলায় এবার বোরো আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৮০০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২১ হাজার ৫০২ হেক্টর। অনেক কৃষক আসছে বিদ্যুতের অভিযোগ নিয়ে। তারা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। আমরা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করছি যেন কৃষকরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পায়।
মন্তব্য করুন